এম মেহেদী সানি, কলকাতা, আপনজন: ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট বা ‘আইএসএফ’-এর বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বলেছেন, ‘কেউ যদি ভেবে থাকে আমি ভয় পেয়েছি, তাহলে ভুল করছে’। ৪২ দিন জেল বন্দি হয়ে থাকার পর অবশেষে শনিবার মুক্তি পেয়ে তিনি রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে ওই মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে তিনি মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে ছিলাম, আছি এবং থাকব বলেও জানিয়েছেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা ও বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। গত বৃহস্পতিবার কোলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে জামিন পেয়েছিলেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিসহ তার সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া আরও ৬৩ জন। গ্রেফতার হওয়ার ৪০ দিনের মাথায় তারা জামিন পেয়েছেন। শুক্রবার বিধায়ক নওশাদের জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাগজপত্র সময়মতো প্রেসিডেন্সি জেলে না পৌঁছনোয় অবশেষে আজ মুক্তি পেলেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ নওশাদ সিদ্দিকিসহ ২১ জন আইএসএফ নেতা-কর্মী-সমর্থককে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। জেল থেকে বেরনো মাত্রই তাকে ফুলের মালা দিয়ে, তার উপর ফুলের পাপড়ি বর্ষণ করে তাকে স্বাগত জানান উচ্ছসিত দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। একইসঙ্গে নওশাদ সিদ্দিকি জিন্দাবাদ, নওশাদ ভাইজান জিন্দাবাদ, ‘আইএসএফ’ জিন্দাবাদ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা জেল চত্বর।
আজ জেল থেকে বেরিয়েই বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি কার্যত চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, ‘কেউ যদি ভেবে থাকে যে আমি ভয় পেয়েছি, তা হলে ভুল করছে। আমি মানুষের সঙ্গে লড়াইয়ে ছিলাম, আছি এবং থাকব। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়েও কথা বলব, আবার সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা ‘ডিএ’ নিয়েও কথা বলব।’ মুক্তি পাওয়ার পর, জেলের মান উন্নয়নের দাবিও তুলেছেন আইএসএফ বিধায়ক ও পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকি। রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক নিয়েও এদিন সুর চড়ান নওশাদ সিদ্দিকি। তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘু ভোট কারও বাবার সম্পত্তি না। কেউ যদি মনে করে সংখ্যালঘু ভোট তাদের নিজস্ব সম্পত্তি, তাহলে মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। সংখ্যালঘুদের বোকা বানিয়ে রাখা হচ্ছে, তা তারা বুঝতে পারছে। বরং, সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরুদের মাঝে ভেদাভেদ তৈরি করে দিয়েছে এই সরকার। তারাই এর উত্তর দেবে। শাসক যাদের ভোটব্যাঙ্ক ভাবছে, তারা আর ভোটব্যাঙ্ক নেই’ বলেও মন্তব্য করেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। গত ২১ জানুয়ারি কোলকাতার ধর্মতলায় আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে আইএসএফ কর্মীদের। এ সময়ে গ্রেফতার হন নওশাদ সিদ্দিকি ও তার কর্মী-সমর্থকরা। নিম্ন আদালতে দু’টি আলাদা থানার মামলায় তারা জামিন পাননি। শেষমেশ কোলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে গ্রেফতারির ৪০ দিনের মাথায় গত বৃহস্পতিবার তারা জামিন পান। গতকাল শুক্রবারই নওশাদ সিদ্দিকির জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাগজপত্র সময়মতো প্রেসিডেন্সি জেলে না পৌঁছনোয় অবশেষে আজ শনিবার তিনি মুক্তি পেলেন৷
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct