সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা নিয়ে ফের কড়া বার্তা দিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এদিন সরকারি কর্মচারীদের কর্তব্য নিয়ে মন্তব্য করেন মহানাগরিক। তাঁর কথায়, সরকারি কর্মচারীদের বুঝতে হবে তিনি মাল্টিন্যাশনালের বাবু নন, ক্লার্ক নন।তিনি মানুষের ট্যাক্সের টাকায় বেতন পান। মানুষের সেবা করাই তাঁর ব্রত হওয়া উচিত। সেইসঙ্গে কলকাতার মহানাগরিক এও বলেন, রাজ্য সরকার তেলা মাথায় তেল দেবে না। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী বা রেশন বন্ধ করে যিনি ৪০ হাজার টাকা পান তাঁকে ৬০ হাজার দেওয়ার বিপক্ষে তিনি এবং তাঁরা। তবে ফিরহাদ এও বলেছেন, ইচ্ছে থাকলেও ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না তার কারণ, কেন্দ্রীয় সরকার এক লক্ষ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। সেটা দিলে আমরা অনেক কিছুই করতে পারি। এর আগে একদিন কলকাতা কর্পোরেশনের কর্মীদের কর্ম বিরতি নিয়ে মেয়র বলেছিলেন, ‘না পোষালে ছেড়ে দিন। কেন্দ্রের চাকরি করতে চলে যান। এখানে চাকরি করতে হবে না।’ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের বার্তা দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু তাতে কড়া কোনও শব্দ ছিল না। জেলা সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমি ম্যাজিশিয়ান নই!’ কিন্তু মহার্ঘভাতা প্রসঙ্গে ধারাবাহিকভাবে কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম যে ভাষায় সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে বলা শুরু করেছেন তাতে ক্ষোভ বাড়ছে বলেই মত অনেকের।পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের আর্থিক সঙ্গতি নয়, এটা যেমন বাস্তব তেমন সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভটাও বাস্তব। কারণ আদালতই বলেছে, ডিএ তাঁদের অধিকার। এখনও মামলা সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে রয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, এ হেন পরিস্থিতিতে মন্ত্রীদের উচিত ভারসাম্য রেখে কথা বলা। কিন্তু কিছু কিছু শব্দ এমনভাবে বলা হচ্ছে যা সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলে দিচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের অনেকে এও বলছেন, এই কথাটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব সহানুভূতির সঙ্গে বলেছিলেন। কিন্তু ফিরহাদের গলায় অন্য সুর শোনা গিয়েছে যা ক্ষোভকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। বুধবার বিকেলে বাজাকদমতলা ঘাটের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এখানেও এই প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তিনি যেটি বলেছেন তার মধ্যে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct