আপনজন ডেস্ক: দেশের অন্যতম প্রধান ‘থিঙ্কট্যাংক’ হিসেবে পরিচিত দিল্লির সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের (সিপিআর) বিদেশি অনুদান পাওয়ার পথ বন্ধ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সিপিআরকে। বুধবার সিপিআরের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি তাদের ওয়েবসাইটে অর্থায়ন বন্ধের বিষয়টির উল্লেখ করে জানিয়েছে যে আগামী ছয় মাসের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। গত পাঁচ বছরে ভারতে ৬ হাজার ৬৭৭টি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) বিদেশি অনুদান পাওয়ার লাইসেন্স বাতিল করেছে দেশটির সরকার। ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন আইন (এফসিআরএ) অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারতের আয়কর বিভাগ সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু নামী ও প্রতিষ্ঠিত এনজিওর নিবন্ধন অথবা বিদেশি অনুদানে রাশ টেনেছে। অক্সফাম ইন্ডিয়া, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, বেঙ্গালুরুর ইনডিপেনডেন্ট অ্যান্ড পাবলিক স্পিরিটেড মিডিয়া ফাউন্ডেশনের মতো অনেক প্রতিষ্ঠানের ওপর এই সরকারি হুকুম জারি হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের গবেষণা, নিবন্ধ, অনুসন্ধান বা বিশেষ প্রতিবেদন সরকারের বিরুদ্ধে বলে মনে করা হচ্ছে, যারাই কোনো না কোনো বিষয়ে সরকারি প্রকল্প বা সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছে, মূলত সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, গত সোমবার সিপিআরকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি বিদেশি অনুদানের একাধিক নিয়মনীতি লঙ্ঘন করেছে। সিপিআরের যাত্রা শুরু ১৯৭৩ সালে। মূলত, সরকারের নীতিসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তারা কাজ করে। নতুন শতকের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব, সেই দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড় (বর্তমান প্রধান বিচারপতির বাবা), ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পাওয়া সাংবাদিক ও সম্পাদক প্রয়াত বি জি ভার্গিস এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন চিন্তাবিদ রাজমোহন গান্ধী, অর্থনীতিবিদ ঈশ্বর আলুওয়ালিয়ার মতো অর্থনীতিবিদেরাও।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct