রাজু আনসারী, সাগরদিঘি, আপনজন: মোটের উপর নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হল সাগরদীঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। সোমবার সকাল ৭ থেকে শুরু হয় ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া। চলে সন্ধ্যা সাড়ে ছটা পর্যন্ত। ভোট গ্রহণ চলাকালীন সময়ে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া প্রায় নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়েছে সাগরদীঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। উল্লেখ্য, রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহার মৃত্যুর কারণে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়। গত ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সাগরদিঘি থেকে জিতেছিলেন সুব্রত সাহা। রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং উদ্যানপালন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তিনি। কিন্তু ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। সুব্রতবাবুর মৃত্যুর জেরে ওই বিধানসভা আসনটি ফাঁকা হয়ে যায়। সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় উপনির্বাচন। এদিন সকালেই ২১০ ও ২১১ নম্বর বুথে প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। পাশাপাশি বোখারা অঞ্চলে বহিরাগত প্রবেশ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। সরিয়ে দেওয়া হয় ৫৩ নম্বর বুথের প্রিজাইডিং অফিসারকে। বিকেলের দিকে কয়েকটি বুথে সাময়িক উত্তেজনা ছড়ায়। যদিও বেলা গড়াতেই মোটের উপর শান্তিতেই সম্পন্ন হয় নির্বাচন। তবে কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে হাজি জুবেদ আলি বিদ্যাপীঠের ৫৪ নম্বর বুথে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ৭৩.৪৯ ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। এদিন উপনির্বাচনে সাগরদিঘিতে কংগ্রেসের জয় সময়ের অপেক্ষা বলে দাবি করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। একইসঙ্গে এদিনের ভোট গ্রহণ পর্ব নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। অধীর বলেন, এই নির্বাচনে সাধারণ মানুষ তৃণমূলের প্রলোভন, বাধা, সন্ত্রাস উপেক্ষা করে বুথে বুথে হাজির হয়ে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন। এই নির্বাচনে তাই কংগ্রেসের জয় অবশ্যম্ভাবী। পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির বহু কর্মীও কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন বলে তার দাবি। বিজেপিকে কটাক্ষ করে অধীর বলেন, বিজেপির দ্বারা হবে না ভেবেই তারা কংগ্রেসকে সমর্থন করছেন। এখন আমাদের দেখতে হবে কতটা মার্জিনে তৃণমূলকে আমরা হারাতে পারলাম।
অন্যদিকে, এদিন তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস ব্যানার্জী সাংবাদিকদের বলেন, এখনও পর্যন্ত যা খবর আছে তাতে আমরাই জিতব। সকাল থেকে দু-এক জায়গায় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। তা সত্ত্বেও তৃণমূল জিতবে। আশা করছি মানুষ মমতা দিদির প্রতি আস্থা রাখবেন। তবে, তৃণমূলের মূল ভরসা ৬৫ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট। মুসলিম ভোট ব্যঙাক ধরে রাখার উপরই তৃণমূলের ভাগ্র ঝুলছে। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে কংগ্রেস প্রার্থীর সভায় ভিড় দেখে তৃণমূল জয়ের ব্যাপারে সন্দিহান বলে সূত্রের খবর। অন্যদিকে জেতার দাবি করেছেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ সাহারও। ভোট শেষে কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস জানান, শান্তিতেই সম্পন্ন হয়েছে নির্বাচন। সাগরদিঘিবাসীকে অভিনন্দন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct