আপনজন ডেস্ক: দেশের মধ্যে বিভিন্ন রাজ্যকে উন্নয়নের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা প্রকল্প ও নীতি অনুসরণ করতে দেখা গেছে। এবার উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করল পশ্চিমবঙ্গ। যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করলে অভিযুক্তের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও ক্ষতিপূরণের যে আইন রযেছে সেই আদলে এবার পশ্চিমবঙ্গে নতুন আইন চালু হতে চলেছে। আন্দোলনের নামে সরকারি বা বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করলে অভিযুক্তের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা কিংবা নিলাম করার জন্য রাজ্য বিধানসভায় এমনই আইন পাশ করল তৃণমূল সরকার। উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগে উত্তরপ্রদেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর ও নষ্ট হওয়ার পর তার ‘বদলা’ নেওয়ার হুঁশিয়াির দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তারপর আইন করে সিএএ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগে জরিমানা ও তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নোটিশ জারি করা হয়। এমনকী অভিযুক্তদের ছবি সম্বলিত হোর্ডিং টাঙিয়ে লখনই সহ বিভিন্ন শহরে হয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির জন্যে জরিমানা দেওয়ার তালিকা প্রকাশ করা হয়। লক্ষ লক্ষ টাকা জরিমানাও আদায় হয়। এবার সেই পথেই এগিয়ে চলল পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার। বিধানসভায় মঙ্গলবার ‘মেনটেন্যান্স অব পাবলিক অর্ডার অ্যাক্ট’-এ সংশোধনী পাস করা হল। এর ফলে সরকারি বা বেসরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হলে অভিযুক্তদের অভিযুক্তের সম্পত্তি নিলাম করে দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, কোথাও সম্পত্তির ক্ষতি হলে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতকে জানাবে সরকার। ১৮০ দিনের মধ্যে আদালতের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে পুলিশ। তার পর আদালত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। ১৮০ দিনের মধ্যে পুলিশ রিপোর্ট জমা দিতে না পারলে বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তি ফেরত পেয়ে যাবে অভিযুক্ত।সম্প্রতি রাজ্যে একাধিকবার সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির বিপুল ক্ষতি হয়েছে। ২০১৯ সালে সংসদে CAA পাশের পর রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভাঙচুর চালানো হয় একের পর এক স্টেশনে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি ট্রেন। গত বছর বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার মন্তব্য নিয়ে রাজপথে তাণ্ডব চালায় একদল ধর্ন্মোন্মাদ। একের পর এক গাড়িতে আগুন ধরানো হয়। ভাঙচুর করা হয় বহু দোকান। এমনকী ডোমজুড় থানায় ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। গত লক্ষ্মীপুজোর রাতে কলকাতার মোমিনপুরে হিংসা ছড়ায়। তাতে বেশ কয়েকটি বাড়ি, দোকান ও মোটরসাইকেলে ভাঙচুর করা হয়। CAA পাশের পর রাজ্যে হিংসা রুখতে একই রকম আইন পাশ করেছিল যোগী আদিত্যনাথের সরকার। তবে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের দাবি, সেই আইনের সঙ্গে এই আইনের আকাশ পাতাল ফারাক।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct