জাকির সেখ, রাজস্থান, আপনজন: জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা মাহমুদ মাদানি রাজস্থানের দুই যুবক জুনায়েদ ও নাসিরকে নির্মমভাবে হত্যা ও পুড়িয়ে মারার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এর পাশাপাশি, এটিকে একটি অমানবিক এবং সন্ত্রাসের মতো ঘটনা বলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-র অধীনে মামলা নথিভুক্ত করার জন্য কেন্দ্রীয় ও হরিয়ানা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। মাওলানা মাদানি বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তি দুটি শব্দ উচ্চারণ করলে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের মামলা করা হয়। এখানে দুইজনকে পুড়িয়ে হত্যা করা হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আরোপ করে বলা হয়েছে, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সরকারের বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করে। মাওলানা মাদানি বলেন, এ ধরনের নিষ্ঠুর, হৃদয়হীন ও জঘন্য কাজ কোনো সভ্য সমাজে, বিশেষ করে ভারতের মতো একটি মহান গণতান্ত্রিক দেশে বরদাস্ত করা যায় না। সংবিধান ও আইন-শৃঙ্খলার জন্য দায়ী সকল নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব এটি রোধ করা এবং এ বিষয়ে অবশ্যই একটি ব্যাপক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ সুপ্রিম কোর্ট নিজেই সমস্ত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় যে এর আগে আকবর খান, জুনায়েদ খান, রকবর খান, উমর, আফরাজুল প্রমুখ একই হরিয়ানা ও রাজস্থানের জমিতে মব লিঞ্চিংয়ে শিকার। এই গো-রক্ষক ও সন্ত্রাসীরা শুধু সমর্থিতই নয়, উৎসাহিত ও সুরক্ষিতও। এমতাবস্থায় মাওলানা মাদানী ভারত সরকারের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন, উপরোক্ত ঘটনার দোষীদের বিচারের আওতায় আনা এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোরতম মামলা দায়েরের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি এ ঘটনায় দোষী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। পুরো বিষয়টির বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত। এর পাশাপাশি নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দিতে হবে।
এদিকে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাকিমুদ্দিন কাসমীর নেতৃত্বে জমিয়তের একটি প্রতিনিধি দল মৌজা ঘাট মিকা জেলা ভরতপুর পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এবং সম্ভাব্য সব ধরনের বিচারের আশ্বাস দেন। মাওলানা হাকিমুদ্দিন কাসমী গ্রামের সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন এবং ধৈর্য্য ও সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানান। জমিয়ত উলামা জেলা মেওয়াত এতিম ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মাওলানা হাকিমুদ্দিন কাসমী জানান, জুনায়েদের ৬ নিষ্পাপ সন্তান রয়েছে। এছাড়াও তার ভাইয়ের সংসারে ৭ সন্তান রয়েছে। ভাইয়ের মানসিক অবস্থা খুব একটা ভালো না। এসব দেখাশোনার দায়িত্ব জুনায়েদের। এ ঘটনার পর এত বড় পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। এখন এটি তাদের অব্যাহত রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়। সেজন্য সমাজসেবীদের তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা উচিত।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct