সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: বাঁকুড়ার বিকনা গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুর মাঠে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বাঁকুড়া বাসীদের প্রতি বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঁকুড়ায় প্রায় শোনা যায় পানীয় জলের কষ্টের কথা। তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে বাঁকুড়ার ঘরে ঘরে নলবাহিত জল পৌঁছে যাবে। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, বাঁকুড়ায় আগে জল পাওয়া যেত না। ৭ লক্ষ ৬০ হাজার বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে। ৩২০০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। শুদু পানীয় জলের ব্যবস্থাই নয়, সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়নেরও বার্তা দেন তিনি। এদিন তিনি প্রায় ১৫০ কোটি টাকার ৩৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও প্রায় ১৯০ কোটি টাকার ৩৫টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। তিনি জানান, উত্তরবঙ্গ–দক্ষিণবঙ্গ সংযোগকারী রাস্তা তৈরি হবে। ৬০ বছর বয়স হলে প্রাপকরা সরাসরি বার্ধক্য ভাতায় নথিভুক্ত হবেন। আগামী বছর বাংলায় ৮ কোটি কর্ম দিবস তৈরি করে ব্যাপক কর্মসংস্থানের ঘোষণা দেন। যদিও একশো দিনের কাজে কেন্দ্রের বিমাতৃসুুলভ আচরণের প্রতিবাদে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। ‘ কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না’ বলে ফের তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী এদিন তাঁর বক্তব্যে ‘বাঁকুড়া জেলা’র ভূয়সী প্রশংসা করেন । শিক্ষা ক্ষেত্রে এই জেলা প্রথম সারিতেই সেকথা বলতে ভোলেননি তিনি । একই সঙ্গে এদিন তিনি বিষ্ণুপুর রামশরণ মিউজিক কলেজ সংস্কারের কথাও ঘোষণা করেন । এছাড়াও এদিন নানান প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও রাজ্যে কিভাবে উন্নয়নের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তার খতিয়ানও তুলে ধরেন তিনি। পাশাপাশি কাশফুল শিল্পের কথা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন , আগে কাশফুল হতো এবং নষ্ট হয়ে যেত আমি বললাম কাশফুল থেকে সুন্দর বালিশ এবং গায়ে দেওয়ার বালাপোশ তৈরি হয়। বিশ্বাস করুন এখন কাশফুল থেকে বালিশ তৈরি হচ্ছে গায়ে দেওয়ার বালাপোশ তৈরি হচ্ছে। বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন , উত্তরপ্রদেশে গরিব মানুষদের উচ্ছেদ উচ্ছেদ করতে গিয়ে বিজেপি সরকার মা মেয়েকে একসাথে পুড়িয়ে মেরেছে। এর কোন বিচার হয় না। সেন্ট্রাল টিম তখন কোথায় যায়? বাঁকুড়ায় বিজেপি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, বিজেপির দুটো এমপি, ওদের ম্যাক্সিমাম এমএলএ ওদের বাঁকুড়া থেকে। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটাও কোন কাজ করেননি বলে তার দাবি। কোকিল যেমন কাকের বাসায় ডিম পাড়ে বাচ্চা বড় হয়ে গেলে পালিয়ে যায় ভোট এলে আসে আর ভোট হয়ে গেলে পালিয়ে যায় বিজেপি বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন , বাঁকুড়া জেলার ছেলে মেয়েরা পড়াশোনায় অত্যন্ত ভালো মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট বের হলে হয় প্রথম না হয় দ্বিতীয় হয়ে থাকে। এই জেলার শিক্ষক শিক্ষিকারা ছাত্রছাত্রীদের ভালো শিক্ষা দেন। আগামী দিনে রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলার সার্বিক উন্নয়নের দিকে জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন বাঁকুড়া গর্ব করার জায়গা বাঁকুড়াকে আমি ভালোবাসি বাঁকুড়ার মানুষও আমাকে ভালোবাসে । এদিনের সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান থেকে ইন্দাসের জুলেখা বেগমকে রেশন দোকানের লাইসেন্স প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী । মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাঁকুড়া জেলার সকল স্তরের সাধারণ মানুষ ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct