সাদ্দাম হোসেন মিদ্দে, ভাঙড়, আপনজন: বুধবার সকাল হতেই দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ভাঙড়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে বোম ফাটার আওয়াজ। কেঁপে কেঁপে উঠছে মাটি, ঘরের ছাদ! কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারছেন না। চলছে পারস্পরিক আলোচনা। আবার কি রাজনৈতিক অশান্তির কারণে বোম পড়ছে? নাকি ভূমিকম্প হচ্ছে! সাম্প্রতিক ভাঙড়ের হাতিশালায় শাসক তৃণমূল ও আইএসএফ দলের মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বোমা ফাটে। অপরদিকে তুরস্ক ও সিরিয়াতে ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পের ভয়াবহ চিত্র এখনও টাটকা। ফলে সাত সকালেই বোমের আওয়াজ এবং মাটিতে এবং ছাদে কম্পন আতঙ্ক সৃষ্টি করে ভাঙড়ের সাধারণ মানুষের মধ্যে! বেলা গড়াতেই অবশ্য কাটল তাল! খোঁজ খবর নিয়ে দেখা গেল আসলে বোম ফাটা কিংম্বা ভূমিকম্প কোনোটাই না! প্রকৃত কারণ হল খনিজ পদার্থের অনুসন্ধান করতে ঘটানো মাটির নিচে হচ্ছে বিস্ফোরণ। বোম ফাটা অথবা ভূমিকম্প কোনোটাই ঘটছে না জেনে কাটে আতঙ্ক! আতঙ্ক কাটলেও তৈরি হয়েছে আশঙ্কা! খনিজসম্পদের খোঁজে খনি মন্ত্রকের অধিনস্ত ওএনজিসি দিনভর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালায় ভাঙড়জুড়ে। ফলে তীব্র কাঁপুনিতে ফাটল ধরবে না তো বাড়ীতে? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মাথার মধ্যে। এছাড়াও সাধারণ মানুষের প্রশ্ন খনিজের সন্ধান পাওয়া গেলে আমাদের বাড়িঘর ছাড়তে হবে না তো? এই আশঙ্কাতেই ঘুম উড়েছে অনেকের! উল্লেখ্য ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের শানপুকুর অঞ্চলের ছেলেগোয়ালিয়াতে বাগজোলা খালের পাড়ে তাঁবু গেড়েছে ওএনজিসি। এখান থেকে বিভিন্ন গ্রামে আরও ছোট ছোট তাঁবু বানিয়ে চলছে খনিজসম্পদ অনুসন্ধানের পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ। এই কাজের জন্য জালের মতো বিছানো হয়েছে বৈদ্যুতিক তার।
মুস্তাফিজুর রহমানে নামের ভাঙড়ের মাঝেরহাট গ্রামের এক বাসিন্দার প্রশ্ন “ওএনজিসি ভাঙড় এলাকায় যে খনিজের খোঁজ করছে, মাটির নিচে বোম্বিং করছে, নিয়মিত মাটি কেঁপে উঠছে। সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতি হলে তার দায় কে নেবে?” নাইমুল ইসলাম নামের ভাঙড়ের গুছড়িয়া গ্রামের বাসিন্দার প্রশ্ন” ভাঙড়ের বিভিন্ন প্রান্তে, রাস্তার ধারে, মাঠে তার গুলো নিয়ে যাওয়া হয়েছে কিন্তু কেন? সেটা জানতে চাই। এর মধ্যে অন্য কোনো চক্রান্ত লুকিয়ে নেই তো?” এবিষয়ে আপনজনের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ভাঙড় ১ নম্বর ব্লকের বিডিও দীপ্যমান মজুমদার। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থা দ্বারা খনিজ অনুসন্ধান চলছে। সাধারণ মানুষ চাইলে আমার সঙ্গে কথা বলতে পারেন।”থ্রেশার মেশিনে সরষে ছাড়াও ধান, গম প্রভৃতি শস্য ঝাড়াই করা যেতে পারে। যান্ত্রিকীকরণের এই যুগে মানুষ সময় এবং অর্থ দুই-ই সাশ্রয় করতে চাষের জন্য যন্ত্রের উপরই নির্ভরশীল হয়ে উঠছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct