আপনজন ডেস্ক: গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরের অনেক পরিবর্তন হয়, যার কারণে খাওয়ার রুচি চলে যায়। আমলকি টকজাতীয় ফল হওয়ায় এটা গর্ভবতীরা খেতেও পছন্দ করেন। তাছাড়া, গর্ভাবস্থায় আমলকি খাওয়া একদম নিরাপদ। ভিটামিন সি, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ আমলকি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি। আমলকির রয়েছে অনেক ভেষজ গুণ। চিকিত্সকরাও আমলকি খাওয়া পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
আজকে জানবো গর্ভাবস্থায় আমলকি খাওয়ার উপকারিতা:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আমলকি: আমলকি হলো একটি ফল যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। ফলে এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর উপাদান গর্ভাবস্থায় হয়ে থাকা সাধারণ জ্বর এবং মূত্রনালীর সংক্রমণ রোধে সহায়ক।
সকালের অসুস্থতা দূর করে: সকালের দিকটা গর্ভবতীদের জন্য খুব অস্বস্তিকর হয়। বেশিরভাগ হবু মা এই সময় ক্লান্তি অনুভব করেন, অলসতা অনুভব হয়, বমি-বমি ভাব আসে, কোনো কাজ করতে ইচ্ছা করে না, মেজাজও বিগড়ে থাকে। আমলকি, বমি বমি ভাব এবং সকালের অসুস্থতাকে দূর করতে চমকপ্রদ ওষুধ। গর্ভাবস্থায় অ্যাসিডিটির সমস্যা সবারই হয় কমবেশি। আমলকির জুস খেলে অম্বলের সমস্যাও মেটে।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি: আমলকিতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে সহজে। এটি আয়রন এবং অন্যান্য পুষ্টি শোষণেও সহায়তা করে এবং সামগ্রিক হজমশক্তি বাড়ায়। এটি খাওয়ার ফলে গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় আমলকি: ডায়াবেটিস না থাকলেও গর্ভাবস্থায় অনেকের ডায়াবেটিস দেখা দেয়, যেটাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলে। গর্ভাবস্থার হরমোনগুলি ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে ডায়াবেটিস হয়। আমলকির মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ডায়াবেটিক উপাদান হবু মায়েদের মধ্যে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনাকে কম করে। গর্ভাবস্থায় হাত–পায়ের পাতা ফুলে যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে: গর্ভাবস্থায় হাত-পায়ের পাতা ফুলে যাওয়া সাধারণ ঘটনা। আমলকি খেলে এই সমস্যা মিটবে, কারণ আমলকিতে থাকে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। এছাড়া আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে জলীয় উপাদান থাকায় এটা দেহকে হাইড্ৰেট রাখতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি রক্তনালীগুলিকে প্রসারিত করতে সাহায্য করে, যা স্বাভাবিক রক্তচাপ ধরে রাখে এবং রক্তচাপ বাড়তে দেয় না। তাই গর্ভাবস্থায় আমলকি খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
মাড়ি থেকে রক্ত বের হওয়া আটকায়: গর্ভাবস্থায় মাড়ি থেকে রক্ত বের হয় অনেকের। যার ফলে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ আসে। আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি এই দুই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় দাঁত ভাল রাখে। দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধে সহায়তা করে আমলকি।
শরীরে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে: আমলকি হল একটি চমৎকার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এর মধ্যে থাকা জলীয় উপাদানের কারণে প্রস্রাবে সমস্যা হয় না অন্তঃসত্ত্বাদের। প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলি বেরিয়ে যায়।
শিশুর স্মৃতি–শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে: আমলকির জুস খেলে গর্ভস্থ শিশুটির স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় হবু মা-কে আমলকি খেতে বলা হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct