নিজস্ব প্রতিবেদক, শিলিগুড়ি, আপনজন: গত ৬ এবং ৭ই ফেব্রুয়ারি শিলিগুড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হল মাদ্রাসা শিক্ষক শিক্ষা কর্মী সমিতির ১৬ তম ত্রিবার্ষিক রাজ্য সম্মেলন। এই উপলক্ষে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় পাঁচশত শিক্ষক প্রতিনিধি উপস্থিত হন। সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলামের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সবার কাজ শুরু হয়। নিয়ম অনুযায়ী পবিত্র কুরআনের কিছু অংশ পাঠ করার পর স্বাগত ভাষণ দেন সমিতির কনভেনার সৈয়দ সাফাখাত হোসেন। শপথ বাক্য পাঠ করেন সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আতিয়ার রহমান। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন শিলিগুড়ি শহরের মহা নাগরিক গৌতম দেব। শিলিগুড়ি শহরের ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার মশাই বলেন, এই মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠনের সম্মেলন এতদিন কেন শিলিগুড়িতে হয়নি এটাই আমার আশ্চর্য লাগছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, আগামী দিনে এই সংগঠনে অনুষ্ঠানে আমি সর্বোত্তমভাবে সহযোগিতা করব। তিনি বলেন, আমি রাজ্য সম্মেলনের পত্রিকা পড়ে দেখলাম, মুখ্যমন্ত্রী যে মাদ্রাসা শিক্ষার পরিকাঠামোগত করেছেন তাতে তার সুন্দরভাবে উল্লেখ আছে। সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন মিদ্দা প্রতিনিধির আন্তরিক স্বাগত জানান। সমিতির মুখপাত্র সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দুদিনের সম্মেলনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন শিক্ষক প্রতিনিধিরা। সারা রাজ্যে মাদ্রাসার শিক্ষার পরিকাঠামগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর যে ভূমিকা গ্রহণ করেছেন তা প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেন। তার জন্যই দুদিনের সম্মেলন থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে সকলেই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। সাথে সাথে মামুখ্যমন্ত্রীর কাছে জেলার প্রত্যেকটি প্রান্ত থেকে আগত শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকরা একান্ত ভাবে দাবি জানান, মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষকের পদ অতিরিক্ত শূন্য থাকার ফলে পঠন-পাঠন দারুন ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এবং অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় পড়ানোর ক্ষেত্রে অনীহা দেখাতে শুরু করেছে। তাই জোরালো দাবি উঠেছে যত দ্রুত সম্ভব মাদ্রাসা গুলিতে সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা। সমিতির কার্যকরী সভাপতি শহিদুল ইসলাম দাবি করেন, বেশকিছু মাদ্রাসায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষিকাদের ট্রান্সফার করা হচ্ছে। অথচ এখন ট্রান্সফার সম্পূর্ণ বন্ধ আছে। এর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। দুদিনের সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন শিলিগুড়ি প্রাইমারি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান দিলীপ রায়, যুগ্ম সম্পাদক শেখ মইনুদ্দিন, সহ-সভাপতি কবিউল ইসলাম, উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ নূরে খোদা। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিক্ষক প্রতিনিধিদের মধ্যে থেকে তিনজন করে শিক্ষক সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের উপর আলোচনা করে আগামী তিন বছরের সমিতির পথ চলার নতুন দিশা দেন। পরিশেষে এই বাংলার শান্তি শৃঙ্খলা, সম্প্রীতি যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়ে প্রার্থনার মাধ্যমে দুদিনের সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়। পরিশেষে রফিকুল ইসলাম সভাপতি আলী হোসেন মিদ্যাকে সাধারণ সম্পাদক, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেনকে মুখপাত্র হিসাবে মোট ৬৩ জনের আগামী তিন বছরের জন্য কমিটি মনোনয়ন করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct