আপনজন ডেস্ক: আয়কর দফতরের আধিকারিকদের হানা বিড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘পতাকা’ গোষ্ঠীর একাধিক অফিসে। বুধবার সকাল থেকে কলকাতার মির্জা গালিব স্ট্রিট, মুর্শিদাবাদের সুতি-সহ ৮ অফিসে একযোগে তল্লাশি আয়কর দফতরের আধিকারিকদের। আয় ব্যয় সংক্রান্ত হিসেবের গরমিলের অভিযোগে আয়কর দফতরের এই হানা বলে সূত্রের খবর। বুধবার সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে মুর্শিদাবাদের সুতির অরঙ্গাবাদে অবস্থিত পতাকা বিড়ি সংস্থার অফিসে আসেন আয়কর দফতরের আধিকারিকদের একটি দল। বেশ কয়েকটি গাড়িতে চেপে তাঁরা আসেন। প্রথমে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা গোটা অফিস চত্বর ঘিরে ফেলে। তার পর আয়কর দফতরের আধিকারিকরা অফিসের ভিতরে ঢুকে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। এই খবর লেখা পর্যন্ত তল্লাশি অভিযান জারি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শুধু অরঙ্গাবাদ নয়, পতাকা গোষ্ঠীর প্রধান কার্যালয় কলকাতার মির্জা গালিব স্ট্রিটের অফিসেও তল্লাশি চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, দেশ জুড়ে পতাকা গোষ্ঠীর প্রায় ৪৬টি প্রতিষ্ঠানে আজ আয়কর দপ্তরের তরফ থেকে অভিযান চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, মালদা এবং কলকাতাতে পতাকা গোষ্ঠীর অফিসে অভিযান চালায় আয়কর দপ্তর। এর ফলে জেলার বিড়ি শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এদিন মুর্শিদাবাদে বিড়ি কারখানার বাইরে বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন থাকায় ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি শ্রমিকদের। ফলে বাইরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁরা।
অন্যদিকে কারখানার ভিতরে যারা কর্মরত ছিলেন, তাঁদেরকে বাইরে বেরোতে দেওয়া হয়নি। এদিন মালদহের কালিয়াচক থানার সুলতানগঞ্জে পতাকা সংস্থার বিড়ি কারখানা ও অফিসে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা হানা দেন। বুধবার সকালে ৭টি গাড়িতে আয়কর দফতরের আধিকারিকদের ২৭ জনের একটি দল তল্লাশি অভিযানে নামে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় চলে তল্লাশি। যদিও পতাকা গোষ্ঠীর তরফে এ নিযে কোনও বিবৃতি মেরেনি। উল্লেখ্য এর আগে বিধায়ক জাকির হোসেনের বিড়ি কারখানায় ও বাড়িতে হানা দিয়ে ১৫ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছিল আয়কর দফতর। যদিও সেই টাকা শ্রমিকদের দেওয়ার জন্য রাখা ছিল বলে দাবি করেছিলেন জাকির। শিল্পপতি বিধায়ক জানিয়েছিলেন, ‘আমার কাছে প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক কাজ করে। আমার বিভিন্ন রকমের ব্যবসাও রয়েছে। কৃষিক্ষেত্রের যে ব্যবসার সঙ্গেও আমি জড়িত সেখানে সমস্ত লেনদেন নগদে হয়। এর পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতনও নগদে দিতে হয়। সেকারণেই রাইস মিলে কিছু নগদ টাকা রাখা ছিল। ওই টাকার একটা অংশ যারা ধান বিক্রি করেছিল তাদেরও প্রাপ্য। আমার বাড়ি থেকে যত টাকা নগদ উদ্ধার হয়েছে তার অনেকটাই মহিলাদের জমানো টাকা। এর পাশাপাশি নিরাপত্তার কারণে শ্রমিকদের বেতনের কিছু টাকাও আমার বাড়িতে রাখা ছিল। আয়কর দফতরের আধিকারিকদেরকে সমস্ত কাগজপত্র দেখালেও তাঁরা আমার দাবির সত্যতা মানতে চাননি এবং কিছু টাকা সিজ করেন।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct