আপনজন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ ওয়াকফ বোর্ডের ভূমিকা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী তথা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সভাপতি মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি। সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ বলেন, মঙ্গলবার রাজভবনে তার বাসভবনে রাজ্যের বেশ কয়েকটি সংখ্যালঘু সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা তার সঙ্গে মিলিত হয়ে বৈঠক করেন। তাতে উপস্থিত হয়েছিলেন কলকাতার রেড রোডের ঈমাম-এ ঈদায়েন তথা রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য ক্বারী ফজলুর রহমান, আহলে হাদিস সংগঠনের রাজ্য কমিটির সম্পাদক মাওলানা জাকির আহমেদ, হুগলির বাসুবাটীর পীরজাদা তাফহীমূল ইসলাম, হাইকোর্টের আইনজীবী সৈয়দ শামসুল আরেফিন, জমিয়তে উলামার রাজ্য সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম, হজ সংগঠনের কর্তা মোক্তার আলি, আইনজীবী এমএ সামাদ, মেদিনীপুর খানকাহর সৈয়দ মিনজাহুল হুসাইনি কাদেরি, আইনজীবী আনসার আলি মণ্ডল প্রমুখ।
সিদ্দিকুল্লাহ বলেন, উপস্থিত সকলেই ওয়াকফ সম্পত্তি তছরুপ নিয়ে অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে সিদ্দিকুল্লাহ বলেন, আলোচনায় অভিযোগ করা হয়েছে ওয়াকফ বোর্ড দুর্নীতির আখড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাহাড় পরিমাণ অর্থ তছরুপের ঘটনা উঠে এসেছে। তার অভিযোগ, ওয়াকফ বোর্ডে প্রভাবশালী এমন দু’তিনজন ব্যক্তি আছেন যাদের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্যদের উপর প্রচণ্ড প্রভাব। সেখানে কেউ কথা বলে কিছু করতে পারেন না। ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করা ছাড়া, প্রমোটারদের হাতে নয়ছয় করা ছাড়া, দালালচক্র ছাড়া আর কোনও কাছ সেখানে হয় না। এরা কোনও কলেজ, হাসপাতাল, আইটিআই করতে পারেনি। আয়ের উৎস হতে পারে এমন কোনও প্রতিষ্ঠান করতে পারেনি। শুধু বিক্রি করতে পেরেছে। অনাথ আশ্রম করতে পেরেছে বলে আমার মনে হয় না। অথচ সাচার কমিটির মতে, উত্তরপ্রদেশের পর দেশের সবচেয়ে বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি পশ্চিমবঙ্গে। সিদ্দিকুল্লাহ জোরের সঙ্গে বলেন, দক্ষিণেশ্বর, বেলুড় মঠ, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন, জয়রাম বাটী সারাদা মণি আশ্রম প্রভৃতি স্থানে দেবোত্তর সম্পত্তি আছে। সেখানে এক ইঞ্চি জমি কেউ দখল করে দেখাক। তার ঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হয়। অথচ ওয়াকফ বোর্ড বলছে পুলিশ প্রটেকশন কে দেবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওয়াকফ সম্পত্তি বেচে খাওয়ার জন্য বোর্ড গড়েননি। তার বরাবর স্বচ্ছতা রয়েছে। তাকে দোষ দেওয়ার কোনও জাযগা নেই। যারা ওয়াকফ বোর্ডে আছেন, সেই ঘুঘুর বাসা ভেঙে দেওয়া দরকার। সিদ্দিকুল্লাহ জানান, আলোচনায় ঠিক হয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের কাছে ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে চিঠি দেওয়া হবে। জমিয়তের ব্যানারে বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে ওয়াকফ বোর্ডের সামনে প্রতিবাদ সভা হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তথ্য ভিত্তিক অভিযোগ করা হবে। তারা কি চেয়েছেন, আর কি হচ্ছে ওয়াকফ বোর্ডে তা তুলে ধরে সুবিচার করা হবে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে ৫১টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওয়াকফ সম্পত্তিতে প্রমোটারির জন্য। অথচ, কয়েক বছর ধরে ওয়াকফ বোর্ড অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তিনি বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চান ওয়াকফ বোর্ড সঠিকভাবে চলুক সংখ্যালঘুদের স্বার্থে। কিন্তু ওয়াকফ বোর্ডের কয়েক সসদস্যের কারণে তা মান্যতা পাচ্ছে না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct