সুব্রত রায় ও এম মেহেদী সানি, কলকাতা, আপনজন: জামিন পেলেন না নওশাদ সিদ্দিকী৷ ১০ দিন পুলিশ হেফাজত শেষে বুধবার তাঁদের তোলা হয়েছিল ব্যাঙ্কশাল আদালতে। কিন্তু এদিনও তাঁদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করল না আদালত। বুধবার সন্ধ্যায় মামলার শুনানি শেষে ব্যাঙ্কশাল কোটের বিচারক বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে আগামী ১৫ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন৷ আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ফের তাঁদের আদালতে তোলা হবে।আইএসএফের অভিযোগ, তাদের সংগঠনের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি আবদুল খালেক মোল্লা এদিন শুনানির সময়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে সেখান থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাল্টা পুলিশের দাবি, ধর্মতলার অশান্তিতে আবদুল খালেক মোল্লা জড়িত ছিলেন। এদিন তিনি বাসে করে পালানোর চেষ্টা করেন, তাঁকে উত্তর বন্দর থানার পুলিশ রাস্তা থেকে গ্রেফতার করে। এজলাসের মধ্যে উপস্থিত থাকা ব্যক্তিকে কেন গ্রেফতার করা হল এই প্রশ্ন তুলে পৃথক পিটিশনও দাখিল হয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালতে। নওশাদ সিদ্দিকীর মামলায় ব্যাঙ্কশাল কোর্ট- এ সওয়াল করতে গিয়ে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, যার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক রেকর্ড নেই, তাকে আটকে রাখা অসাংবিধানিক। আইএসএফ এর যে মহিলা সমর্থক বন্দি আছেন তাকে নির্যাতন করা হয়েছে ১১ দিন ধরে। বিকাশ বাবুর অভিযোগ আসমা খাতুন নামের ওই মহিলাকে রাত ১২টার সময় মেডিকেল করা হয়েছে, তাঁর স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা হয়নি। তাকে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে হাবিলদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে ছুটিতে এসেছিল, ভিড়ের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল বলে জানান বিকাশবাবু। তার অভিযোগ, আজ অবধি কেসের কোনো অগ্রগতি নেই। ইচ্ছেমতো গ্রেফতার করা হয়েছে। বাচ্চা ছেলেকেও অ্যারেস্ট করা হয়েছিল। অপরদিকে সরকারি পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান সরকারি সম্পতি ধ্বংস করা হয়েছে। একাধিক পুলিশ আহত হয়েছেন। সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে, স্থানীয় ভিডিও আছে, ১৪ জন পুলিশ আহত হয় এর মধ্যে ২ জন বেলভিউতে ভর্তি আছে৷ বিধায়কে থেকে ফোন দুটিকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানোর আর্জি জানানো হয়, পাশাপাশি ডরিনা ক্রসিং এর সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ চেকিং করার আবেদন জানানো হয় সরকারি আইনজীবীর পক্ষ থেকে।সরকারি আইনজীবী এদিন আদালতে জানান নওশাদ সিদ্দিকী সহ মোট ১৯ জন গ্রেপ্তার হয় ।এদের মধ্যে ১জন অল্পবয়স্ক হওয়ার কারণে জামিন হয়। তারপর নওশাদ সিদ্দিকী পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাই এখন নওশাদ সিদ্দিকীর সহ মোট ২০ জন পুলিশি হেফাজতে। এদিন নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয় আদালতে। দীর্ঘ সকল চলার পর এই মামলার রায় কিছুক্ষণের জন্য স্থগিত রাখেন বিচারক। পরে আদালতের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, থানা যে ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী সহ তাদের সকলকে আগামী ১৫ দিন থাকতে হবে জেল হেফাজতে।ব্যাঙ্কশাল আদালতের রায় নিয়ে এদিন নওশাদ সিদ্দিকীর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে আপনজন প্রতিনিধিকে তিনি জানান, 'বিচারক বেল দেননি, কিছু বলার নেই, বেল দেওয়া উচিত ছিল একটু বলতে পারি, বেল দেওয়া না দেওয়া বিচারকের সিদ্ধান্ত, ওরা পুলিশ হেফাজত চেয়েছিল সেটা না দিয়ে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷' বুধবার সকাল থেকে ব্যাঙ্কশাল কোট চত্বর ঘিরে ছিল পুলিশের কড়া নজরদারি। আইএসএফ সমর্থকরা হাতে লেখা পোস্টার নিয়ে আদালত চত্বরে স্লোগান দিতে থাকেন৷ কিন্তু দিনের শেষে আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট নন আইএসএফ সমর্থকরা৷
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct