ইউক্রেনকে ট্যাংক সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। এই ঘোষণা চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। এ নিয়ে বিশ্বরাজনীতির মঞ্চ স্বভাবতই বেশ সরগরম! যুদ্ধকবলিত ইউক্রেনকে সমর্থনের অংশ হিসেবে পশ্চিমারা ট্যাংক পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে—এর অর্থ এই নয় যে, ইউক্রেন যুদ্ধ রাতারাতি শেষ হয়ে যাবে। চলমান যুদ্ধ এখনো কয়েক মাস স্থায়ী হবে বলে ধরে নেওয়াই অধিক যুক্তিযুক্ত। বছরব্যাপী স্থায়ী না হলেও সহসাই বন্ধ হচ্ছে না রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত।। এ নিয়ে লিখেছেন মার্টিন কেটল। আজ প্রথম কিস্তি।
ইউক্রেনকে ট্যাংক সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। এই ঘোষণা চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। এ নিয়ে বিশ্বরাজনীতির মঞ্চ স্বভাবতই বেশ সরগরম! যুদ্ধকবলিত ইউক্রেনকে সমর্থনের অংশ হিসেবে পশ্চিমারা ট্যাংক পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে—এর অর্থ এই নয় যে, ইউক্রেন যুদ্ধ রাতারাতি শেষ হয়ে যাবে। যদিও কোনো কোনো রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষক মনে করছেন তেমনটাই। যুদ্ধ এখন প্রায় শেষ—এই ধারণা অমূলক তো বটেই, বরং চলমান যুদ্ধ এখনো কয়েক মাস স্থায়ী হবে বলে ধরে নেওয়াই অধিক যুক্তিযুক্ত। বছরব্যাপী স্থায়ী না হলেও সহসাই বন্ধ হচ্ছে না রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত। তবে ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতে অস্ত্রশস্ত্র তুলে দেওয়ার যে ঘোষণা এসেছে পশ্চিমা বিশ্ব থেকে, তা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও দেশটির জনগণের জন্য নিঃসন্দেহে স্বস্তির সংবাদ। চলমান যুদ্ধে এ এক বিশেষ মুহূর্তও!
ইউক্রেনকে যুদ্ধট্যাংক সরবরাহের ঘোষণা বেশ কিছু কারণে বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। উদাহরণস্বরূপ—যে ধরনের ট্যাংক সরবরাহের কথা বলা হয়েছে, তা ইউক্রেনকে বিশেষ সামরিক সুবিধা এনে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক অ্যাড আর্নল্ডের কথা অনুযায়ী, শক্তিশালী ট্যাংকগুলো যুদ্ধে পার্থক্য গড়ে দেবে—এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। ইউক্রেনের সেনাদের যে তিন ধরনের পশ্চিমা ট্যাংক সরবরাহের কথা বলা হয়েছে, তা রাশিয়ান বাহিনীকে যারপরনাই বেকায়দায় ফেলে দেবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এম-১ আব্রামস, জার্মানির লেপার্ড-২ ও যুক্তরাজ্যের চ্যালেঞ্জার২—প্রতিটি ট্যাংকই সোভিয়েত যুগের টি-৭২-এর তুলনায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় শক্তিশালী। রুশ সেনাদের চরম ধরাশায়ী করতে এসব ক্ষিপ্রগতির ট্যাংকের জুড়ি মেলা ভার! এর সঙ্গে যদি ফরাসি লেক্লারক ট্যাংক যুক্ত হয়, তাহলে তো কথাই নেই—পুতিন বাহিনী নাস্তানাবুদ হয়ে পড়বে অতি অল্প সময়ে! উল্লেখ করতে হয়, পশ্চিমা বিশ্বের ট্যাংকগুলো বহু দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। ব্যাপক গতিশীল ও প্রাণঘাতী ট্যাংকগুলো বাস্তবিক অর্থেই অগ্নিশক্তির মতো! ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ান বাহিনীকে এখন পর্যন্ত যে ধরনের অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে, তার সঙ্গে তুলনা করলে বলতে হয়, এই ট্যাংকগুলোর আক্রমণের মুখে রাশিয়ান ট্যাংক এক মুহূর্তও টিকতে পারবে না! এখানে একটি বিষয় বলে রাখা দরকার, পশ্চিমাদের ট্যাংকগুলো তুলনামূলক ভারী। অর্থাত জলাবদ্ধ পরিবেশে এগুলো মাটিতে কিছুটা দেবে যেতে পারে।বিপরীতে, রাশিয়ান ট্যাংকগুলো কিছুটা হালকা হওয়ায় জলাবদ্ধ মাটিতে পুঁতে যাওয়ার ভয় নেই। এই একটিমাত্র সুবিধার দিক থেকে এগিয়ে থাকবেন রুশ সেনারা। কিন্তু তা সত্ত্বেও পশ্চিমা বিশ্বের আধুনিক মানের ট্যাংকগুলো এতাটাই নির্ভুল নিশানা করতে সক্ষম যে, এর আক্রমণ রুখতে পারা শুধু কঠিনই নয়, অনেকটা অসম্ভবই! ট্যাংকগুলোর নেভিগেশন সিস্টেম এতটাই অত্যাধুনিক যে, কি রাত কি দিন—সব সময়ই বাড়তি সুবিধা এনে দেবে ইউক্রেনের আর্টিলারি ও পদাতিক বাহিনীকে। উপরন্তু আক্রমণ রুখে দিয়ে পালটা আক্রমণ করার ক্ষেত্রে ট্যাংকগুলোর রয়েছে বিশেষ পারঙ্গমতা। মোট কথা, সম্মিলিত কৌশল বাস্তবায়নে ইউক্রেনের সেনাদের সর্বাত্মক সক্ষমতা এনে দেবে ট্যাংকগুলো, যা যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ান সেনাদের নিশ্চিতভাবে ফেলে দেবে বেশ বেকায়দায়।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct