রাজু আনসারী, অরঙ্গাবাদ, আপনজন: সাগরদীঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী হলেন শামসেরগঞ্জের ভূমিপুত্র সমাজসেবী ও শিল্পপতি বলে পরিচিত তরুণ বায়রন বিশ্বাস। শুক্রবার বিকেলেই তার নাম ঘোষণা করেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। শামশেরগঞ্জের বিশিষ্ট শিল্পপতি ‘জিৎ’ বিড়ি খ্যাত বাবর বিশ্বাসের পুত্র বায়রন বিশ্বাসের উপর আস্থা রেখে সাগরদিঘীতে বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল কংগ্রেস। মুর্শিদাবাদের কংগ্রেসের গড়ে বিড়ি শিল্পপতিদের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফল্য পেয়েছেন। জাকির হোসেন থেকে শুরু করে খলিলুর রহমান, কিংবা ইমানি বিশ্বাস একের পর এক বিড়ি শিল্পের কর্ণধাররা যখন তৃণমূল কংগ্রেসের দিতে পা বাড়িয়েছেন তখন ওই এলাকার আরও এক বিড়ি শিল্পপতিকে নির্বাচনে ঢাল করতে পথে নামল কংগ্রেসও। উল্লেখ্য, করা যেতে পারে, প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত সাহার মৃত্যুতে সাগরদীঘি বিধানসভা আসনটি খালি হয়ে যায়। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি নতুন করে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে কমিশন। ঠিক তারপরেই প্রার্থী হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সাগরদিঘিী ব্লক তৃণমূল খংগ্রেস সবাপতি তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূর আত্মীয় দেবাশীষ ব্যানার্জির নাম ঘোষণা করা হয়। যদিও এবার ৬৫ শতাংশ সংখ্যালঘু জনসংখ্যা বিশিষ্ট সাগরদিঘীতে সংখ্যালঘুরা চাইছিলেন স্থানীয় কোনও সংখ্যালঘুকে প্রার্থী করা হোক। এ নিেয় তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্বে প্রথমে খানিকটা ক্ষোভ থাকলেও সাংসদ খলিলুর রহমান ও তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মণ্ডল মাঠে নেমে পড়েন। তারপর ক্ষোভ প্রশমিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রাচরে নামার ব্যাপারে জোর কৎপরতা চলছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।
শুক্রবার মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস নেতা মনোজ চক্রবর্তী কংগ্রেস নেতাদের নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষে সাগরদিঘী বিধাননসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে বায়রন বিশ্বাসের নাম ঘোষণা করেন। কংগ্রেস নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, বিশিষ্ট সমাজসেবী বায়রন বিশ্বাস কংগ্রেসের প্রার্থী।
প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণার পরেই বায়রন বিশ্বাস জানান, জেতার ব্যাপারে ১০০ শতাংশ আশাবাদী আমি। আমাকে কংগ্রেস প্রার্থী করায় অধীর চৌধুরীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
তবে, বায়রন বিশ্বাসকে সাগরদিঘী উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী ঘোষণার পর মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেস তাদের প্রতিক্রিয়া দিয়েছে শুরু করেছে। সাগরদিঘীর পার্শ্ববর্তী এলাকা শামসেরগঞ্জের ভূমিপুত্র বলে পরিচিত তরুণ বায়রন বিশ্বাসকে ইতিমধ্যে বহিরাগত বলে মন্তব্য করতে শুরু করেছে তৃণমূল। শুক্রবার তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মণ্ডল সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিম্বাস সমাজসেবী নন। আর তিনি বহিরাগত। বহিরাগত প্রার্থীকে সাগরদিঘী মানুষ মেনে নেবেন বলে তার বিশ্বাস।
তৃণমূল কংগ্রেস বায়রন বিশ্বাসকে সমাজসেবী বলে মেনে নিতে না পারলেও শামসেরগঞ্জ এলাকার আর একটা ‘জাকির হোসেন’ বলে পরিচিত হয়ে উঠছিলেন বাযরন বিশ্বাস। জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেন শুধু বিড়ি শিল্পপতি নন, তিনি যেমন শিব অয়েল মিল, রাইস মিলও গড়েছেন তিনি বেশ কয়েকটি বিএড, ডিএলএড কলেজে গড়েছেন। শিক্ষার বিস্তারে তার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে মুর্শিদাবাদে। ঠিক তেমনি শামসেরগঞ্জ, ধুলিয়ান ও মালদায় বিডি ফ্যাক্টরি রয়েছে বাাবর বিশ্বাসের। তারই পুত্র বায়রন বিশ্বাসই এখন মূল কর্ণধার। বায়রন সেই বিডি শিল্প পরিচলনার পাশাপাশি ও-টু পাবলিক স্কুল নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন শামসেরগঞ্জে। সূত্রের খবর, সেখানে ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট’-এর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন্ সেই সঙ্গে ও-টু হাসপাতাল সম্প্রতি চালু করেছেন বলে খবর। তাই তাকে এখন তরুণ প্রজন্মের ‘জাকির হোসেন’ বলে অনেকে বলতে শুরু করেছেন। কিন্তু তরুণ বায়রন বিশ্বাস রাজনীতিতে সেভাবে জড়িত ছিলেন না। এবার তিনি অধীর চৌধুরির সৌজন্যে সরাসরি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লেন। তার প্রার্থী হওয়ার ঘটনায় অবশ্য সাগরদিঘীর কংগ্রেস নেতাদের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সূত্রের খবর, ২০১৬ সালে কম মার্জিনে হেরে যাওয়া কংগ্রেস প্রার্থী আমিনুল ইসলামের পক্ষে পাল্লা ভারি ছিল। কিন্তু স্থানীয় নেতা বদরুল ওরফে বাপ্পাও প্রতিযোগিতার দৌড়ে ছিলেন। এর সঙ্গে নাম উঠছিল গতবারের প্রার্থী হাসানুজ্জামানেরও। কিন্তু িম্প্রতি কংগ্রেসের এক সভায় অধীর চৌধুরির সামনেই আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষোব দেকান কিছু সমর্থক। সেই কারণেই, পার্শ্ববর্তী শামসেরগঞ্জের বায়রন বিশ্বাসকে প্রার্থী করে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব এড়াতে চেয়েছেন বলে কংেগ্রস সূত্রের খবর। আসলে মমতা যেমন জঙ্গিপুর, সুতিতে বিড়ি শিল্পপতিকে প্রার্থী করে কংগ্রেসকে ধরাশায়ী করেছেন অধীর চাইছেন সেই কায়দায় সাগরিদিঘীতে তৃণমূলকে হারাতে। যদিও, সেটা বড় চ্যালেঞ্জ। স্থানীয়রা বলছেন, বামেরা প্রার্থী না দিলে জোর লড়াইযের মুখে পড়বেন তৃণমূল প্রার্থী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct