নায়ীমুল হক, আপনজন: বুধবার ছিল বাংলায় অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক নবজাগরণের কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৯ তম জন্মদিন। ১৮২৪ সালে ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কবির পিতা জমিদার রাজনারায়ণ দত্ত আর মাতা জাহ্নবী দেবী। মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচনা করেন বিখ্যাত সনেট ‘কপোতাক্ষ নদ’।মহাকবির দ্বি-শত জন্মবর্ষ উপলক্ষে এদিন তাঁর আবক্ষ প্রতিকৃতিতে কলকাতার রামমোহন লাইব্রেরি এন্ড ফ্রি রিডিং রুমের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। মাইকেল ছিলেন রাজ্যের ঐতিহ্যমন্ডিত বিদ্যালয় হিন্দু স্কুলের কৃতী ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম। তাই মধুকবির দ্বি-শত জন্মবর্ষকে স্মরণীয় করে তুলতে হিন্দু স্কুলের পক্ষে নেয়া হয়েছে এক বছরের নানা স্বাদের অনুষ্ঠান। এতে থাকবে প্রদর্শনী, ছাত্র-ছাত্রীদের নাটক, ক্যানভাস, মর্মর মূর্তি স্থাপনা, স্মরণিকা প্রকাশ ইত্যাদি। জানিয়েছেন হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিত দত্ত। তিনি আরো বলেন, এবার সরস্বতী বন্দনায় স্কুলের ছাত্ররা থিম হিসাবে বেছে নিয়েছে মধুকবিকেই।
ঐতিহ্যের অনুকরণ না করে নব্যরীতি প্রবর্তনের কারণে তাঁকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম 'বিদ্রোহী' কবি হিসেবেও অভিহিত করা হয়। ‘পদ্মাবতী’ নাটক, ‘একেই বলে সভ্যতা’ ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নামের দুটি প্রহসন, ‘মেঘনাদবধ কাব্য’, ‘ব্রজাঙ্গনাকাব্য’, ‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটক, ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’ ও ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ রচনা করেন তিনি।সালটা ছিল ১৮৫৮। মধুকবি তখন থাকতেন শ্যামবাজারের বেলগাছিয়া অঞ্চলে। একদিন ভাবলেন নাটক দেখতে যাবেন। ব্যবস্থাও হল। কিন্তু একদম সন্তুষ্ট হতে পারলেন না তিনি নাটক দেখে। বাংলা নাটকের বেহাল অবস্থায় খুবই হতাশ হলেন। সেদিনই ভাবলেন বাড়িতে ফিরে বাংলা নাটক লেখা শুরু করতে হবে। মনে মনে যে প্রতিজ্ঞা করলেন তা রক্ষাও করলেন।১৮৫৯ সালে তাঁর প্রথম বাংলা রচনা ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটক প্রকাশিত হয়। এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক নাটক। তাই মাইকেলকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক নাটকের স্রষ্টাও বলা হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct