নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: জামাআতে ইসলামী হিন্দের উদ্যোগে দক্ষিণবঙ্গ মহিলা সম্মেলন হয়ে গেল কলকাতার পার্কসার্কাস ময়দানে। রবিবার ২২ মার্চ এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামাআতের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি সাইয়েদ আমিনুল হাসান ও মহিলা শাখার সর্বভারতীয় সম্পাদিকা আতিয়া সিদ্দিকা। এছাড়াও সম্মানীয় অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইমামে ইদায়েন ক্কারী ফজলুর রহমান, জামাআতের রাজ্য সভাপতি মাওলানা আব্দুর রফিক, দুই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রহমত আলি খান ও মুহাম্মদ নূরুদ্দিন। প্রধান অতিথির ভাষণে আমিনুল হাসান বলেন, “বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও” স্লোগান যারা দেয়, তারাই হাথরস, উন্নাও, কাঠুয়া থেকে বিলকিস বানু – সবক্ষেত্রে ধর্ষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে। অথচ নির্ভয়াকাণ্ডে এরাই সহিংস প্রতিবাদে মুখর হয়েছিল। আর এখন তারাই ক্ষমতায় এসে দেশকে ওইসবে যুক্ত অপরাধীদের ছাড় দিচ্ছে। আতিয়া সিদ্দিকা বলেন, নারীজাতির আজ ঘরে-বাইরে দ্বিমুখী চ্যালেঞ্জ। দেশ তথা বিশ্বজুড়ে নারীরা আজ ভোগের পণ্যে পরিণত হয়েছে। তাদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন এবং শোষণ চলছে। নারীজাতির সহজাত মূল্যবোধের অবমূল্যায়ন হচ্ছে। রেহানা সুলতানা বলেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর কী এমন ঘটল যে, মেয়েদেরকে তাদের প্রাপ্য অধিকার আদায়ের জন্য পথে নামতে হল? রাজ্য সভাপতি মাওলানা আব্দুর রফিক সাহেব বলেন, আমরা কেবলমাত্র মুসলিমদের কথা বলছি না। নারীদের সমস্যা কেবল মুসলিমদের ক্ষেত্রেই নয়, সমস্ত জাতি ধর্ম বর্ণের মহিলাদের সমস্যা একই। তাই এই আন্দোলন শুধু মুসলমানদের নয়, এ আন্দোলন সবার জন্য। এ আন্দোলন সময়ের দাবি। তিনি আরও বলেন, যতদিন না নারীর অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষিত হচ্ছে, ততদিন এই আন্দোলন জারি থাকবে। আমরা নারীদের প্রাপ্য অধিকার, সম্মান ও মর্যাদা ইনসাফপূর্ণভাবে পাইয়ে দিতে চাই। আমরা নারী-পুরুষ সহ সমগ্র মানবজাতির কল্যাণ ও মুক্তির জন্য সওয়াল করি এবং আওয়াজ ওঠাই। সব রকম সামাজিক অন্যায় ও অবিচারের প্রতিবাদে আমরা সোচ্চার হই, গর্জে উঠি। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামাআতের রাজ্য কমিটির বিভাগীয় সম্পাদক মাওলানা তাহেরুল হক, নাসিম আলি, মুহা. তাহেরুদ্দীন, এএফএম খালিদ, জাফির আহমেদ, সাদাব মাসুম, আব্দুল আজীজ প্রমুখ। এ ছাড়াও ছিলেন মানবাধিকার সংগঠন এপিসিআর-এর রাজ্য সভাপতি আব্দুস সামাদ, সদ্ভাবনা মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক সেখ তাহের উদ্দীন, মজলিশে মুশাওয়ারাতের আব্দুল আজীজ, মীযান পত্রিকার সম্পাদক ডা. মসিহুর রহমান, কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমাদ হাসান ইমরান, বন্দি মুক্তি কমিটির রাজ্যনেতা ছোটন দাস, ছাত্র সংগঠন এসআইও-র রাজ্য সভাপতি সাঈদ মামুন, কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সম্পাদক ইমরান হোসেন। ছাত্রী সংগঠন জিআইও-র রাজ্য সভানেত্রী শরীফা খাতুন প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মঞ্জুরা খাতুন।দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ২০ হাজার মহিলা প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন। সুবিশাল সমাবেশের নিরাপত্তা ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে আকাশপথে নজরদারি চালানো হয়। গুরুগম্ভীর বিষয়ে বক্তব্যের একঘেঁয়েমি কাটাতে মাঝেমধ্যে ছাত্রীদের কোরাস ইসলামী সংগীত এবং স্লোগান সমাবেশকে অন্য মাত্রা এনে দেয়। ঘোষণাপত্র পাঠ করে দোয়ার মাধ্যমে রাজ্য সভাপতি মাওলানা আব্দুর রফিক সাহেব সমাবেশের সমাপ্তি টানেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct