নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: দেশজুড়ে সোমবার সাড়ম্বরে পালিত হয় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী। এদিন রাজ্য সরকারের তরফে মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল কলকাতার রেড রোডে নেতাজির মূর্তি সংলগ্ন এলাকায়। এদিন বেলা ১২টা নাগাদ সেখানে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলা ১২টা ১৫ মিনিট নাগাদ নেতাজি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেই মুহূর্ত ক্ষণেই এদিন নেতাজির মূর্তির পাদদেশে মাল্যদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি মঞ্চে শঙ্খধ্বনিও করেন তিনি। পরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি নাম না করেই প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্র সরকারকে নানা ইস্যুতে আক্রমণ শানেন। তার মধ্যে প্রথমেই ছিল আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ২১টি দ্বীপের নামকরণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘নেতাজি যখন আন্দামানে গিয়েছিলেন, তখনই স্বরাজ দ্বীপ, শহিদ দ্বীপ নামকরণ হয়েছিল। এখন এসব অনেকে বলেছেন, আসলে তা নয়। নেতাজিই নামকরণ করে গিয়েছিলেন।’উল্লেখ্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিবস উপলক্ষে এদিন কেন্দ্র সরকার পরাক্রম দিবস পালন করছে। সেই উপলক্ষ্যেই এদিন আন্দামান ও নিকোবরের ২১টি বড় দ্বীপের নতুন করে নামকরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশের সম্মান রক্ষার্থে কর্তব্য পালন করে পরমবীর চক্র প্রাপ্ত ২১ সৈনিকের নামে নাম রাখা হয়েছে আন্দামানের ওই ২১টি দ্বীপের। একই সঙ্গে রস আইল্যান্ডের নাম দেওয়া হয়েছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস দ্বীপ। সেখানে এদিন নেতাজিকে উৎসর্গ করা জাতীয় স্মৃতিসৌধের মডেলও উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। আন্দামান দ্বীপপুঞ্জেরই হ্যাভলক আর নীল আইল্যান্ডের এদিন নাম দেওয়া হয়েছে স্বরাজ আর শহিদ দ্বীপ। এই দুটি নামও নেতাজির দেওয়া। কিন্তু এদিন কেন্দ্র সরকারের তরফে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন এই দ্বীপদুটি নাকি নামহীণ ছিল। স্বাধীনতার পর এই দুটি নামকেও নাকি কোনও সম্মান দেওয়া হয়নি। তাই তাঁর সরকারই এই নামকরণ করে সম্মান দিচ্ছে নেতাজিকে। সেই সূত্রেই এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা সরব হয়েছেন। সাফ জানিয়েছেন, এই নামকরণ নেতাজিই করে গিয়েছেন। এখন কেউ নামকরণ করছেন এমন মোটেও নয়। কার্যত উহ্য রেখেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, নেতাজির নাম ভাঙিয়ে নিজের প্রচারই করছেন প্রধানমন্ত্রী। নেতাজির করে যাওয়া নামকরণকেও এখন নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct