নিজস্ব প্রতিবেদক, বারুইপুর, আপনজন: ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের এক সমাবেশে দলের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ নওসাদ সিদ্দিকী ফের সরব হলেন গরিব মানুষদের মৌলিক অধিকার আদায়ের পক্ষে। চরম সমালোচনা করলেন কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারকে। মঙ্গলবার বারুইপুর থানা এলাকার হাটপুকুর অঞ্চলের হরিমুল গ্রামের জনসভায় বিধায়ক পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, যাদের কাঁচা বাড়ি তাদের সরকারি ঘর পাওয়ার কথা, কিন্তু যাদের তিনতলা বাড়ি আছে তারা বাড়ি পেয়ে যাচ্ছেন। অথচ গরিব মানুষদের মৌলিক অধিকার তাদের ঘর পাওয়া। তাই গরিব মানুষদের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে সাফ জানিয়ে দেন নওশাদ সিদ্দিকী। সেই সঙ্গে বলেন, রাজ্যের শাসক দলের নেতা-কর্মীরা যারা দুর্নীতি করে টাকা কামিয়েছে, গরিবদের হক মেরেছে, আইএসএফ ক্ষমতায় এলে সেই টাকা তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে সরকারি কোষাগারে দেবে। তারপর সেই টাকা গরিব মানুষের উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে। আবাস যোজনা তার একটি দৃষ্টান্ত মাত্র। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আইএসএফ রাজনৈতিক ময়দানে এসেছে তিনি জানান। তাই
ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে আইএসএফের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। নওশাদ বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতির জেরে মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি ও বিভেদের রাজনীতি দেশকে সর্বনাশের পথে নিয়ে গেছে। অন্যদিকে রাজ্যসরকারের ভ্রান্তনীতি ও দুর্নীতির চরম সমালোচনা করেন। নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, সরকারি আইনে যেসব কৃষক ৬০ বছর বয়সের আগে মারা গেছেন তারা ক্ষতিপূরণ পাবেন। কিন্তু আপনাদের এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখুন, সেই ক্ষতিপূরণ অন্য কোনও দাদা বা দিদি তুলে নিয়েছেন। এরকম যদি কৃষকের মৃত্যু হয় তাহলে কৃষি দফতরে গিয়ে আগে দরখাস্ত জমা দেবেন যাতে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ওই গরিব পরিবারটা দু লক্ষ টাকা পায়। ৬০ বা ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে যেসব কৃষক আছে তারা পেনশন পান কিনা জিজ্ঞেস করুন।
নওশাদ আরও বলেন, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর বলেছিল তারা রাজ্যের ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধার করবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধার করা তো দূরের কথা ওয়াকফ সম্পত্তি ১ নম্বর খতিয়ানে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে হিন্দুদের দেবোত্তর সম্পত্তি যা বিক্রি করা যায় না তা এই তৃণমূলের আমলে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। যখনই আমি প্রতিবাদ করছি দেবোর সম্পত্তি বিক্রি করা যায় না, তখনই আমাদের মুসলমানদের দল বলে কটাক্ষ করা হচ্ছে। আর ওয়াকফ সম্পত্তি বেদখল নিয়ে প্রতিবাদ করলে বলা হচ্ছে বিজেপির দালাল। নওশাদ সিদ্দিকী মানুষের অধিকারের পক্ষে লড়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করে বলেন, অাসফাকউল্লাহ, প্রফুল্ল চাকিরা দেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। সেই পথেই আমি মানুষের অধিকারের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাব। েএদিনের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আইএসএফের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি আবদুল মালেক মোল্লা, জেলা সম্পাদক সাজাহান লস্কর, মেঘনাদ হালদার, বাবুলাল, প্রশান্ত প্রমুখ। তবে, সোনাখালি ও বারুইপুরে অাইএসএফের সভায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct