নকীব উদ্দিন গাজী, গঙ্গাসাগর, আপনজন: গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে উপছে পড়েছে ভিড়। গঙ্গাসাগর সমুদ্র সৈকতে কার্যত তিল ধারণের জায়গা নেই। গঙ্গাসাগরে মকর সংক্রান্তির পূণ্যস্নান উপলক্ষ্যে জনজোয়ার সাগরে। এই বছর গঙ্গাসাগরে কার্যতর রেকর্ড সংখ্যক মানুষের জনসমাগম হতে চলেছে এমনটাই আশা করেছে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। আর এবার সাগর মেলায় পরিবেশ ও গঙ্গাদূষণ রুখতে প্লাস্টিক ফ্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রকল্পের আওতায় গঙ্গাসাগর বকখালী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জিবিডিএ-র পক্ষ থেকে জৈব পলিমার ব্যাগ বিতরন করা হচ্ছে। দোকানদার থেকে দর্শনার্থী সকলকেই এই ব্যাগ ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গঙ্গাসাগরের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল জানান, প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার জন্য জৈব পলিমার ব্যাগ দেওয়া হচ্ছে। এটি দেখতে প্লাস্টিকের মতো তবে এটি আসলে কর্ন স্টার্চ। এই পদার্থটি একশো শতাংশ দ্রবণীয়। তিন মাস ব্যবহার না হলে এই পদার্থটি নিজেই মিশ্রিত হয়ে যাবে। এই পদার্থটি এক ধরণের প্লাস্টিকের বিকল্প। দফতরের ২০০ বেশি স্বেচ্ছাসেবীদের দ্বারা এই ব্যাগটি তীর্থযাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এর সঙ্গে দোকানদারদের হাতে কাপড় ও কাগজের ব্যাগও দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের প্লাস্টিকের ব্যাগ দেখা যাচ্ছে তাদের কাছ থেকে প্লাস্টিক ব্যাগ নিয়ে জৈব পলিমার ব্যাগ দেওয়া হচ্ছে।গঙ্গাসাগর তটে জিবিডিএ বিভাগ কর্তৃক মকর সংক্রান্তির জন্য একটি অস্থায়ী কর্মশালা তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকেই জনগণের মধ্যে চার দশমিক পাঁচ লক্ষ পলি ব্যাগ এবং কুড়ি হাজার সিমের ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে। জেলা শাসক সুমিত গুপ্তা জানান, এখানের কর্মশালায় কীভাবে ব্যবহৃত জিনিষপত্র দিয়ে বানানো হয় তা দেখানো হচ্ছে। লোকেরা চলে যাওয়ার পরে, কাচের বোতল, পুরানো কাপড় এবং অন্যান্য জিনিস সৈকত থেকে সংগ্রহ করা হবে। যা পুনর্ব্যবহার করা যায় সমস্তটা কর্মশালায় দেখানো হয়। ব্যবহৃত কাচের বোতলগুলি রঙিন করে সুন্দর ফুলদানি তৈরি করা হচ্ছে, এছাড়া পুরাতন পোশাক থেকে মাদুর এবং ব্যাগ প্রস্তুত করছেন মহিলারা। এই কাজ করার জন্য বিভিন্ন এনজিও এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। মেলার পরে এটি বিবেচনা করা হবে কীভাবে এই জিনিসগুলি মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া যেতে পারে। মানবিকা জানা জানান, শুধুমাত্র গঙ্গাসাগর মেলার জন্য জিবিডিএ বিভাগ এই পরিকল্পনাটি নিয়েছে। তবে আগামী দিনে চেষ্টা করা হবে বছরভর যাতে সাগরে এটি করা যায়। পরিবেশ বান্ধব হয়ে ওঠে সাগরদ্বীপ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct