সজিবুল ইসলাম ও রাজু আনসারী, সাগরদিঘী, আপনজন: সোমবার নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগেই সভাস্থলে হাজির হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সাগরদীঘির ধুমার পাহাড় মাঠে সভাস্থল সংলগ্ন হেলিপ্যাডে নামেন তিনি ১১টা ৪৫ নাগাদ। আজকের সভায় হাজির আছেন শ্রম দপ্তরের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী তথা জঙ্গীপুরের বিধায়ক জাকির হোসেন, বিদ্যুৎ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ আখরুজ্জামান, সহ জেলার সমস্ত বিধায়কেরা, জেলা তৃণমূলের বিশিষ্ট নেতৃত্বরা। অন্যদিকে আজকের এই প্রশাসনিক সভায় উপস্থিত রয়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলার জেলা শাসক ও ভোলানাথ পান্ডে সহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিকগন। মঞ্চ থেকে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় পাট্টা বিতরণ স্বল্পমূল্যে পেঁয়াজ সংরক্ষণ ঘর, ট্রাইসাইকেল বিতরণ, লক্ষীর ভান্ডার, কৃষান ক্রেডিট কার্ড, সবুজ সাথী, জয় জোয়ার এই রকম নানান বিভাগে মানুষের হাতে পরিষেবা প্রদান করলেন। সবুজ সাথী অষ্টম পর্যায়ে ১লক্ষ ৩০ হাজার ছাত্র ছাত্রীদের সাইকেল এদিনথেকে বিতরন শুরু হয়। ঐক্যশ্রী প্রকল্পে ১লক্ষ ৪০ হাজার পরিষেবা দেওয়া হয়েছে, ৩ লক্ষ ৭২ হাজার দুয়ারে সরকার ক্যাম্প হয়েছে তাতে ৬ কোটি পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সাথী ২১ লক্ষ বিতরণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অনেক নতুন ইউনিট শুরু হয়েছে। আগামী দুবছরে ১৮ লক্ষের বাড়ী বাড়ী জল পৌঁছাবে এবং এই মুহূর্তে ৫ লক্ষ বাড়িতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বহরমপুরে ১১ কোটি ব্যয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট করা হয়েছে। ৬৭ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরী করা হয়েছে। ৭০ লক্ষ কন্যাশ্রী দেওয়া হয়েছে। ১ লক্ষ ৭০ হাজার রূপশ্রী, ১ কোটি ৮৬ লক্ষ লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পে , স্বাস্থ্য সাথী তে ৯.৫ কোটি, খাদ্য সাথীতে ৯ কোটি, কাস্ট সার্টিফিকেট ১ কোটি ৫৫ লক্ষ। এইরকম কোন খাতে কত অর্থ প্রদান করা হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তার নথি তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে মুসলিমদের জন্য কবরস্থান নির্মাণ, মাদ্রাসাগুলোতে স্মার্ট বোর্ড, সরকার স্বীকৃত আন এডেড মাদ্রাসাগুলিতে অর্থ সাহায্যের কথাও তুলে ধরেন।
সাগরদিঘির সভা থেকে লালবাগ সেমিনার হলের মেরামতি প্রভৃতিতে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় বছর দশেক ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে লালবাগ সেমিনার হল। সংস্কারের অভাবে একই অবস্থায় প্রায় দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বেহাল দশায় পড়ে রয়েছে লালবাগ সেমিনার হল। বিধায়ক জাকির হোসেনের বাড়িতে ইনকাম ট্যাক্সের রেড নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে জাকিরের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রের নির্দেশে বাংলার সরকারকে হেনস্থা করছে। তৃণমূলের শক্তিশালী লোকদের খুঁজে বের করে অপদস্থ করা হচ্ছে। আর তা করছে ‘দিল্লির লাড্ডুরা’। তিনি বলেন, এভাবে বাংলার সরকারকে রোখা যাবে না। তাঁর কটাক্ষ, ‘ক্ষমতায় আছে বলে নিজেকে হিরো মনে করছে। ক্ষমতায় না থাকলেই জিরো, বিগ জিরো’। এরপরেই তিনি বলেন, ‘দিল্লির লাড্ডুরা বুঝতে পারছেন রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে কি আটকানো যায়?’ মুখ্যমন্ত্রীর দৃঢ় বক্তব্য, ‘এতে তৃণমূল আরও শক্তিশালী হচ্ছে’। তাঁর নিশানায় ছিল, বাম এবং কংগ্রেসও। তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ, রাজ্যের টাকা এবং উন্নয়ন আটকাতে রাম-বাম- শ্যাম জোট বেঁধেছে। ওরা বিজেপি-বাম ও কংগ্রেস।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct