নকীব উদ্দিন গাজী, গঙ্গাসাগর, আপনজন: পুণ্য স্নানের আশায় দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে গঙ্গাসাগরে লাখো লাখো তীর্থযাত্রীর সমগম ঘটেছে। পুণ্য স্নানের মাহেন্দ্রক্ষণ এর অপেক্ষায় প্রহর গুনছে গঙ্গাসাগরে আগত লাখো লাখো তীর্থযাত্রীরা। তারই মধ্যে শনিবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ সাংবাদিক সম্মেলন করলেন রাজ্যের একগুচ্ছ মন্ত্রী। এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু। শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়। পুলক রায়। অরূপ বিশ্বাস। বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। সেই সঙ্গে শনি বার সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা শাসক সুমিত গুপ্তা। সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্য আধিকারিক গন। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ২০২৩ গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে বলেন গত ৫ই জানুয়ারি থেকে ১৪ই জানুয়ারির সন্ধ্যে পর্যন্ত প্রায় ৪০ লক্ষ তীর্থযাত্রী গঙ্গাসাগরে এসেছে। এদের মধ্যে বর্তমানে ৪৮ জন তীর্থযাত্রী সাগরের বিভিন্ন স্থায়ী এবং অস্থায়ী হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি রয়েছে। ১২ জন অসুস্থ তীর্থযাত্রীকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পাঁচজন তীর্থযাত্রীকে এয়ার এম্বুলেন্সে করে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে কলকাতায়। এখনো পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে পুণ্য স্নান করতে সর্ব মোট তিন তীর্থ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন মকর সংক্রান্তির পুণ্য স্নানের কথা মাথায় রেখে সমুদ্র গর্ভে প্রায় তলিয়ে যাওয়া ৪০০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা সংরক্ষণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন এখনো পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে আগত ৩২ জন তীর্থ যাত্রী হারিয়ে যাওয়ার পর তাদের প্রত্যেককেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়েছে। সেই সঙ্গে এখনো পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে পুণ্য স্নান করতে আসা ৮ লক্ষ ৪০ হাজার তীর্থযাত্রীর হাতে বন্ধন শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি এখনো পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে ২৮ টি পকেটমারের ঘটনার কথা জানা যাচ্ছে। এরই মধ্যে চুরি হয়ে যাওয়া ৯৫ হাজার ৩২৫ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গনে পকেটমারের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ২০২৩ গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য এই সাংবাদিক সম্মেলনে তুলে ধরেছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তবে ১৩ তারিখ রাত থেকে ঘন কুয়াশার কারণে বেশ কয়েক ঘন্টা বন্ধ রাখা হয়েছিল বাস ভেসেল এবং লঞ্চ পরিষেবা। যার কারণে ১৪ তারিখ সকাল থেকে ডায়মন্ড হারবার কুলপি লট নাম্বার এইট এবং নামখানা সহ বিভিন্ন বাফার জোনে তীর্থযাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। তবে ১৪ তারিখ সকাল প্রায় দশটার পর কুয়াশা কাটলে চালু করা হয় বাস ভেসেল এবং লঞ্চ পরিষেবা। তারপরেই ১৪ তারিখ সকাল দশটার পর থেকে বহু পুণ্যার্থী পুণ্য স্নানের আশায় গঙ্গাসাগরে রওনা দেয়।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct