রামাল্লার উত্তর-পশ্চিমে জিবিয়া গ্রামের কাছে একটি বিশাল সবুজ উদ্যান আছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরের ঘনবসতিপূর্ণ জীবনের ব্যস্ততা থেকে স্থানীয় ফিলিস্তিনিরা একটু স্বস্তিতে নিশ্বাস ফেলতে বহু দিন ধরে এই উদ্যানে বেড়াতে আসেন। ছুটির দিনে অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে আসেন। এখানে যেসব ইসরাইলি জোর করে বসতি গেড়েছেন, তাদের অনেকে সশস্ত্র অবস্থায় ইসরাইলি সেনাদের সমর্থন নিয়ে উদ্যানে ঘুরতে আসা লোকদের হয়রানি করছেন ও তাড়িয়ে দিচ্ছেন।এ নিয়ে লিখেছেন জালাল আবু খাতের। আজ প্রথম কিস্তি।
রামাল্লার উত্তর-পশ্চিমে জিবিয়া গ্রামের কাছে একটি বিশাল সবুজ উদ্যান আছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরের ঘনবসতিপূর্ণ জীবনের ব্যস্ততা থেকে স্থানীয় ফিলিস্তিনিরা একটু স্বস্তিতে নিশ্বাস ফেলতে বহু আগে থেকে এই উদ্যানে বেড়াতে আসেন। ছুটির দিনে অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে আসেন। অনেকে দল বেঁধে বনভোজন করতে আসেন। কেউ হাঁটতে আসেন। তবে সম্প্রতি নতুন উৎপাত শুরু হয়েছে। এখানে যেসব ইসরাইলি জোর করে বসতি গেড়েছেন, তাদের অনেকে সশস্ত্র অবস্থায় ইসরাইলি সেনাদের সমর্থন নিয়ে উদ্যানে ঘুরতে আসা লোকদের নানাভাবে হয়রানি করছেন এবং তাড়িয়ে দিচ্ছেন।স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাঁদের হয়রানি করা শুরু হয়েছে আজ থেকে চার বছর আগে। ওই সময় সেটেলাররা ওই এলাকায় একটি অবৈধ ‘খামার ফাঁড়ি’ প্রতিষ্ঠা করেন। খামারটি বানানোর অনুমতি নেওয়ার সময় বলা হয়েছিল, সেখানে গবাদিপশু পালন করা হবে। তবে বাস্তবে স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের এবং দর্শনার্থীদের অবাধে উদ্যানে ঢোকা থেকে বিরত রাখতেই এ খামার করা হয়েছে।
গত কয়েক বছরে জিবিয়ার উদ্যানে ইসরাইলি সেটেলারদের সহিংসতার কয়েকটি ঘটনা ইসরাইলি সংবাদপত্রে এসেছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে হারেৎজ পত্রিকা একটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে নিয়ে প্রতিবেদন ছেপেছিল। সেই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, পরিবারটি ফিলিস্তিনি, কিন্তু তাঁরা ইসরাইলের নাগরিক। তাঁরা সেখানে যাওয়ার পর সেটেলাররা তাদের হয়রানি করে। একপর্যায়ে ইসরাইলের সেনারা তাঁদের সেখান থেকে বের করে দেয়। এর কয়েক সপ্তাহ পরই আবার একই ধরনের ঘটনা ঘটে। আবার আরেকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে হয়রানি করা হয়। সেটেলাররা এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে তঁাদের কাছে আইডি কার্ড দেখতে চান এবং একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁদের চলে যেতে বলেন। একই বছরের অক্টোবরে নূর নামের আমার এক বন্ধু তাঁর অন্য তিন বন্ধুকে নিয়ে সেখানে শুক্রবারের বনভোজন করার সময় সেটেলারদের নিশানায় পড়ে যান। তিনি আমাকে বলেছেন, তাঁরা সবে খাওয়া শুরু করেছেন; এমন সময় একজন সেটেলার ঝোপ থেকে বেরিয়ে এসে তাঁদের দিকে অ্যাসল্ট রাইফেল তাক করেন এবং সেখান থেকে তাঁদের ‘অবিলম্বে চলে যেতে’ বলেন। নূর বলেছেন, তাঁরা যখন খাওয়া ফেলে উদ্যান ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন, তখনো ইসরাইলি লোকটি রাইফেল তাক করে তাঁদের ছয় মিনিট ধরে অনুসরণ করেছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে আমি একদল সাংবাদিক এবং স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে জিবিয়ায় গিয়েছিলাম নভেম্বরের শেষের দিকে। একজন ফিলিস্তিনি চাষির জলপাই চাষ ও ফসল আহরণের তথ্য ও ছবি নেওয়ার জন্য মূলত আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। জলপাই তোলা শুরু হওয়ার কিছু সময় পরে চারজন ইসরাইলি সেনার পাহারায় আটজন সশস্ত্র সেটেলার আমাদের ঘিরে ফেলেন।
লেখক জেরুসালেমের বাসিন্দা ও স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ ডুন্ডি-র ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস অ্যান্ড পলিটিকস বিভাগের ছাত্র।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct