রাজু আনসারী, অরঙ্গাবাদ, আপনজন: বছরের পর বছর স্কুলে আসছেন না এক শিক্ষক। অথচ মাস গেলেই একাউন্টে পেয়ে যাচ্ছেন বেতন! অত্যাধিক সংখ্যায় ছাত্রছাত্রী থাকলেও শিক্ষকের স্কুল কামাইয়ের জেরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। সেই অভিযোগে এবার বেশ কয়েক মাস পর শিক্ষককে স্কুলে পেয়ে কার্যত ঘরবন্দি করে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার দুপুরে ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জ ব্লকের ৮৬ নম্বর দক্ষিণ লস্করপুর প্রাইমারি স্কুলে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম সাবির হোসেন। বেশ কিছুক্ষণ ধরেই চলে বিক্ষোভ। বিক্ষোভ চলাকালীন সময়েই ওই শিক্ষক পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। যদিও পুনরায় গ্রামবাসীদের কাছে ধরাশায়ী হয়ে স্কুলেই থাকতে বাধ্য হন তিনি। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করলেও শারীরিক অসুস্থতা এবং ঘন কুয়াশার জেরে দূর থেকে আসতে অসুবিধার জন্য স্কুলে আসতে পারতেন না বলেই দাবি করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক। এদিকের অভিযুক্ত শিক্ষকের স্কুল না আসার জেরে দু মাস থেকে ওই শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেই জানিয়েছেন ধূলিয়ান চক্রের এসআই হোসনেয়ারা খাতুন। জানা গিয়েছে, সামসেরগঞ্জের অন্যতম পিছিয়ে পড়া লস্করপুর গ্রামের দক্ষিণ লস্করপুর প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক সাবির হোসেন। ২০১০ সালে চাকুরিতে জয়েন দিলেও ট্রান্সফার করে ২০১২ সালে সামসেরগঞ্জের স্কুলে যোগ দেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন আগে স্কুলে এলেও ভালোভাবে স্কুলেই আসেন না তিনি। বছরের পর বছর স্কুল না আসলেও মাসে মাইনে দিব্যিই পেয়ে যান ওই শিক্ষক। শুক্রবার বেশ কিছুদিন পর স্কুলে ওই শিক্ষককে দেখতে পান বলে গ্রামবাসীরা। তখনই তাকে ঘিরে ফেলেন এলাকাবাসী। অভিযোগ, এলাকাবাসীর ঘেরাও এর আঁচ পেয়ে পাঁচিল টপকে পালাচ্ছিলেন তিনি। যদিও শিক্ষককে গ্রামবাসীরা ধরে আটকে রাখেন। সাবির হোসেন নামে ওই শিক্ষকের স্কুলে না আসার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ৮৬ নম্বর দক্ষিণ লস্করপুর প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে ধূলিয়ান চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক হোসনেয়ারা খাতুনও। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ ও তার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন স্কুল ইন্সপেক্টর।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct