নিজস্ব প্রতিবেদক, মোথাবাড়ি, আপনজন: দীর্ঘদিনের পঞ্চায়েত প্রধান, মালদা জেলা পরিষদের একাধিকবার সদস্য ও প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ, প্রাক্তন শিক্ষক ও বিশিষ্ট প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যিনি কখনও রাজনৈতিক ময়দানে ভোটযুদ্ধে লড়াইয়ে অপরাজেয় থেকেছেন তিনি সাফিজুদ্দিন আহমেদ। তার বাড়ি মোথাবাড়ি থানার রথবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের কমলপুর বাবলা গ্রামে। সাফিজুদ্দিন আহমেদ এর ৮৬ তম জন্মদিন পালিত হল নতুন বছরে রবিবার। সপরিবারে একেবারে ঘরোয়া পরিবেশে। হাজির ছিলেন সাফিজুদ্দিনের পুরাতন নতুন বিভিন্ন প্রজন্মের পরিবার সদস্যগণ। তার জন্মদিন পালন করে সুদীর্ঘ জীবনের জন্য দোয়া প্রার্থনা করা হয়। মুখরিত হয়ে ওঠে জন্মদিনের আসর। এখন কার্যত বার্ধক্যজনিত একাধিক অসুখবিসুখ আক্রান্ত। একরকম গৃহবন্দী জীবন। সাফিজুদ্দিনের জৈষ্ঠ পুত্র পঞ্চায়েত সদস্য তথা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি হাসিমুদ্দিন আহমেদ বলেন, সকালবেলা বাবা চা খেতে খেতে বললেন নিজের জন্মদিনের কথা। এবার ৮৬ তম বর্ষে পদার্পণ । হাসিমুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাবা কংগ্রেসে থেকে রাজনৈতিক সন্ন্যাস গ্রহণ করেছেন। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের প্রশংসা করেন। মোথাবাড়ি বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন কাজ করেন ও মানুষের পাশে দাঁড়ান। তার ও ভূয়সী প্রশংসা করেন। পরিবারের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য হাসিমুদ্দিন আহমেদের কথায় আমার বাবা কংগ্রেস পার্টি করেছেন। রাজনীতি ও আদর্শভাবে পার্টি করেছেন। বাবা এখন পার্টি করেন না । বয়সের ভারে আক্রান্ত। বাবার কোনো জন্মদিন পালন হয়নি । এদিন অপ্রত্যাশিতভাবে গোটা পরিবার মিলিত হলাম। প্রসঙ্গত, সাফিজুদ্দিন আহমেদের পৌত্রবধূ সামসূন নেহার সংশ্লিষ্ট রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। এক পৌত্রী নাজরিন আহমেদ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। বড় ছেলে হাসিমুদ্দিন আহমেদ গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্য তথা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি।। জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে সাফিজুদ্দিন আহমেদ প্রথম পঞ্চায়েত নির্বাচনে দাড়িয়ে সদস্য হন। বিধূভূষন রায় পঞ্চায়েত প্রধান ও সাফিজুদ্দিন আহমেদ উপপ্রধান হন। ১৯৬৭সালে বিধূ ভূষন বাবু প্রয়াত হলে প্রধান হন সাফিজুদ্দিন আহমেদ। টানা দীর্ঘদিন প্রধান ছিলেন তিনি। ১৯৫৭ সালে মালদহ কলেজে পাঠকালে ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। অত:পর ১৯৬২ সালে সাফিজুদ্দিন আহমেদ, শৈলেশ মিশ্র, বিধূভূষন রায় একজন শিক্ষকের পরামর্শে কংগ্রেসের অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৩ মালদা জেলা পরিষদের সদস্য। ২০০৩ সাল থেকে ২০০৮ মোথাবাড়ি ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও বিরোধী দলনেতা। ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন সাফিজুদ্দিন আহমেদ। তার রঙিন অপরাজেয় রাজনৈতিক জীবন সত্যিই বিরল। সিদ্ধার্থ শংকর রায়, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, প্রনব মুখার্জী, বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাথে সরাসরি যোগাযোগ ও কথাবার্তা হতো। এখন তিনি কংগ্রেস থেকে রাজনৈতিক অবসর গ্রহণ করেছেন। তবে কিছুজনের রাজনীতি তার কৌলিন্য ধরে রাখতে সক্ষম হচ্ছে না। তবে মমতাদির উন্নয়ন ও কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন সাফিজুদ্দিন আহমেদ। জন্মদিনে তার দীর্ঘজীবন কামনা করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct