টেস্ট-এর পর মাধ্যমিকের বিশেষ প্রস্তুতি (ইতিহাস)
সাহাবুল ইসলাম গাজী
পাবাদাড়া হে: উ: এস এইচ হাই মাদ্রাসা
অতীতের কথা বলা ইতিহাসের মূল বৈশিষ্ট্য। এবারে কিছুটা অতীতের স্মৃতিচারণা হয়ে যাক ! সামনে আমাদের মাধ্যমিক পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় কীভাবে আমরা ভালো ফলাফল করব ,তা নির্ভর করে বিগত বছরে যে সমস্ত ছাত্র ছাত্রীরা পাশ করে গেছে তারা কী বলছে? সর্বপ্রথম আমাদের দেখা দরকার বিগত বছরগুলিতে কি ধরনের প্রশ্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় এসেছিল? এবার পুরো সিলেবাসের উপরে পরীক্ষা হবে। এজন্য আমাদের একটু সচেতন থাকতে হবে।সবার প্রথমে আমাদের ভাবা দরকার কীভাবে ছোট ছোট প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর করা যায় ! তার জন্য আমাদের দরকার প্রতিটি অধ্যায় খুঁটিয়ে পড়া। প্রথমে আমরা যেটা করবো, প্রতিটি অধ্যায়ের যে বিষয়গুলো বুঝতে পারছি না সেগুলোকে একটা জায়গায় লিখে রাখবো। এরকম আটটি অধ্যায় যে যে বিষয়গুলো আমার অজানা সেগুলো আমি একটি খাতায় লিপিবদ্ধ করবো। প্রথমেই যেখানে বুঝতে পারছি না সেই বিষয়ে গুলো উপর আমাকে জোর দিতে হবে। এরপর আমি মাধ্যমিকের মে কোনো একটি টেস্ট পেপারের যতগুলো ইতিহাস বিষয়ে প্রশ্নপত্র আছে সেগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য করবো। এমসিকিউ বা ১ নম্বর মানের প্রশ্নের জন্য আমি প্রতিটা প্রশ্ন প্র্যাকটিস করবো। ২ নম্বর, ৪ নম্বর, ৮ নম্বর মানের প্রশ্নের জন্য আমি প্রশ্নপত্র গুলো খুঁটিয়ে পড়বো। একই বিষয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ কোণ থেকে পরীক্ষায় প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন ধরো, নতুন সামাজিক ইতিহাস কাকে বলে বা নতুন সামাজিক ইতিহাসের উপর একটি টীকা লেখ বা নতুন সামাজিক ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন? এই প্রশ্নটি আমরা যদি ভালোভাবে লক্ষ্য করি তাহলে দেখবো মোটামুটি উত্তর একই হবে।সে জন্য একটি বিষয়কে নানান দিক থেকে বোঝাটা জরুরি। তাহলে পরীক্ষায় একটি বিষয়ের উপর যে প্রশ্ন আসুক না কেন আমি উত্তর লিখে আসতে পারবো।
উত্তর লেখার সময় আমাদের টু দা পয়েন্ট উত্তর লিখতে হবে। উত্তর হবে তথ্য ভিত্তিক। যেমন ধরো, নারী শিক্ষা প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা কর। আমরা যদি এরকম লিখি, নারী শিক্ষা প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি মেয়েদের জন্য বিভিন্ন জেলায় বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নানান বই লিখেছিলেন। এরকম উত্তর লিখলে উত্তরের মধ্যে কোন তথ্য থাকে না। ফলে পরীক্ষক সন্তুষ্ট হন না।কিন্তু এই উত্তরটি যদি আমি একটু ভালোভাবে তথ্যভিত্তিক লিখি,যেমন, তিনি ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় বেথুন সাহেবকে মেয়েদের স্কুল প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন। তিনি বাংলার বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। সেই স্কুলগুলি জন্য অর্থসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া তিনি শিক্ষা প্রসারে বর্ণপরিচয়, কথামালা ,বোধোদয় প্রভৃতি পুস্তক লেখেন। অর্থাৎ তোমার উত্তর হতে হবে তথ্যভিত্তিক। তবেই পরীক্ষক তোমাকে পুরোপুরি নাম্বর দেবেন। ইতিহাস বিষয়টিকে মুখস্ত করতে যাবে না। কোন বিষয় মুখস্থ করলে বেশিদিন মনে থাকেনা।বাড়িতে উত্তর লেখার সময় নিজের ভাষায় অর্থাৎ তোমরা যে ভাষায় কথা বলো সেই ভাষায় উত্তর লেখার চেষ্টা করবে। আর একটা কথা বলি তোমাদের অনেকের মনে সংশয় আছে যে ইতিহাস বিষয়ে মনে হয় বেশি বেশি লিখতে হয়। আর উত্তরের মধ্যে যদি বেশি পয়েন্ট না লিখি তাহলে মনে হয় পরীক্ষক নম্বর দেবেন না,এই ধারণা ঠিক নয়। প্রশ্নের যেরকম নির্দেশ থাকবে ঠিক সেটাকে অনুসরণ করে এখন থেকে অনুশীলন শুরু করো।
তোমাদের বোঝার সুবিধার জন্য নিচে নমুনা প্রশ্ন দেওয়া হল।
১ নম্বর মানের mcq প্রশ্ন:
1.1)1911 খ্রিস্টাব্দে আইএফএ শিল্ড জয়ী মোহনবাগান দলের অধিনায়ক ছিলেন
a) গোষ্ঠ পাল b) শিবদাস ভাদুড়ি c) চুনী গোস্বামী d) শৈলেন মান্না
1.2) নতুন সামাজিক ইতিহাস চর্চা শুরু হয়
a) 1940 দশকে b) 1950দশকে c) 1960 দশকে d) 1970দশকে
1.3) বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়
a) 5 জুন b) 5 জুলাই c) 5 ই সেপ্টেম্বর d) 5 ডিসেম্বর
1.4). বঙ্গদর্শনপত্রিকার সম্পাদক ছিলেন
a) শিশির কুমার ঘোষ b) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় c) কালীপ্রসন্ন সিংহ d) দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
1.5) ব্রহ্মানন্দ নামে পরিচিত ছিলেন
a) কেশবচন্দ্র সেন b) অক্ষয় কুমার দত্ত c) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর d) রাজা রামমোহন রায়
1.6) ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি সঙ্গে যুক্ত ছিলেন
a) শিবনাথ শাস্ত্রীb) ডিরোজিও c) স্বামী বিবেকানন্দd) ডেভিড হেয়ার
1.7) গ্রামবার্তা প্রকাশিকা প্রকাশিত হয়েছিল
a) 1859 খ্রিস্টাব্দে b)1863 খ্রিস্টাব্দে c) 1870 খ্রিস্টাব্দে d)1875 খ্রিস্টাব্দে
1.8) ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার ম্যাগনাকার্টা বলা হয়
a) মেকলে মিনিট কে b)উডের ডেসপ্যাচ কেc) বেন্টিঙ্কের ঘোষণাকে d) সনদ আইন কে
1.9)সুই মুন্ডা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন
a) চুয়াড় বিদ্রোহ b) কোল বিদ্রোহে c) সাঁওতাল বিদ্রোহd) মুন্ডা বিদ্রোহে
1.10) রংপুর বিদ্রোহের একজন নেতা ছিলেন
a) মজনু শাহ b) দিগম্বর বিশ্বাস c) নুরুল উদ্দিন d) রাম রতন মল্লিক
1.11) বাংলার নানাসাহেব বলা হয়
a) রাম রতন মল্লিক কে b) তাতিয়া টোপি কে c) তিতুমীরকে d) দীনবন্ধু মিত্র কে
1.12) ফরাজি আন্দোলনের প্রবর্তক ছিলেন
a) তিতুমীর b)দুদুমিয়া c) হাজী শরীয়াতুল্লাহ d) সৈয়দ আহমেদ
1.13) ‘দ্য সিপয় মিউটিনি এন্ড দি রিভল্ট অফ 1857’গ্রন্থটির লেখক হলেন
1) রমেশচন্দ্র মজুমদার 2)সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় 3) জহরলাল নেহেরু 4)জন রলেন্স
1.14) ঊনবিংশ শতাব্দীতে সভা সমিতির যুগ বলে অভিহিত করেছেন
a)সুশোভন সরকার b) অনিল শীল c) রমেশচন্দ্র মজুমদার d)সুকুমার রায়
1.15) ভারত সভা প্রতিষ্ঠিত
a) 1832 খ্রিস্টাব্দে b)1876 খ্রিস্টাব্দে c)1834 খ্রিস্টাব্দে d)1867 খ্রিস্টাব্দে
1.16) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গোরা উপন্যাস লেখেন
a) সিপাহী বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে
b) বঙ্গভঙ্গের প্রেক্ষাপটে
c) ভারতছাড়ো আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে
d) অসহযোগ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে
1.17) ভারতে হাফটোন প্রিন্টিং পদ্ধতি প্রবর্তন করেন
a)পঞ্চানন কর্মকার b) সুকুমার রায় c) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী d)চার্লস উইলকিন্স
1.18) বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল ও কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন
a) অরবিন্দ ঘোষ b) রাসবিহারী ঘোষ c) চিত্তরঞ্জন দাসd) সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর
1.19) বেঙ্গল কেমিক্যালস এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন
a) জগদীশচন্দ্র বসু b) প্রফুল্ল চন্দ্র রায় c) মেঘনাথ সাহা d) মহেন্দ্রলাল সরকার
1.20) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন
a) 1921 খ্রিস্টাব্দে b)1913 খ্রিস্টাব্দে c) 1955 খ্রিস্টাব্দে হাজার d)1872 খ্রিস্টাব্দে
২ নম্বর মানের প্রশ্ন:
2.1) নতুন সামাজিক ইতিহাস বলতে কী বোঝায়?
2.2) স্থানীয় ইতিহাস কাকে বলে?
2.3) বাংলার নারীশিক্ষা বিস্তারে ড্রিংক ওয়াটার বেথুন এর অবদান লেখ।
2.4) ডেভিড হেয়ারকে কী কারনে স্মরণ করা হয়?
2.5) নব্যবঙ্গ কাদের বলা হত?
2.6) ভারতীয় ব্রাহ্মসমাজ বিভক্ত হল কেন?
2.7) বারাসাত বিদ্রোহের প্রকৃতি কী ছিল?
2.8) নীল বিদ্রোহে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা কী ছিল?
2.9) 1857 খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের ফলাফল লেখ।
2.10) হিন্দু মেলা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?
2.11) ভারত সভা প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য লেখ।
2.12) বর্তমান ভারতগ্ৰন্থে বিবেকানন্দ দেশবাসীকে কিভাবে স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেছেন?
2.13) ছাপাখানার সঙ্গে শিক্ষা বিস্তারের সম্পর্ক লেখ।
2.14) তারকনাথ পালিত স্মরণীয় কেন?
2.15) বসু বিজ্ঞান মন্দির কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?
2.16) বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা উদ্দেশ্য কী ছিল?
৪ নম্বর মানের প্রশ্ন :
3.1) গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’র মধ্যে দিয়ে তৎকালীন সময়ের কীরূপ সমাজ চিত্র পাওয়া যায়?
3.2) নারী শিক্ষা বিস্তারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান লেখ।
3.3) টীকা লেখ :ডিরোজিও নব্য বঙ্গ আন্দোলন।
3.4) 1855 খ্রিষ্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করেছিল কেন?
3.5) আধুনিক ভারতের জাতীয়তাবাদী ভাবধারা উন্মেষে আনন্দমঠ উপন্যাসের অবদান কী ছিল?
3.6) বাংলার মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে শ্রীরামপুর মিশনের ভূমিকা লেখ?
3.7) আধুনিক ছাপাখানার বিকাশে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।
3.8) ভারতবর্ষে আধুনিক বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার বিকাশে আই এ সি এস এর ভূমিকা লেখ।
৮ নম্বর মানের প্রশ্ন:
4.1) উনিশ শতকে বাংলায় কীভাবে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিকাশ হয়েছিল সংক্ষেপে লেখ।উচ্চ শিক্ষার বিকাশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা আলোচনা করো।
4.2) নীল বিদ্রোহের কারণ গুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো। এই বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য গুলি উল্লেখ করো।
4.3)1857 সালের মহাবিদ্রোহের চরিত্র সংক্ষেপে লেখ।
পরীক্ষার হলে তিন ঘন্টা
* পরীক্ষার হলে তোমরা প্রথমে প্রশ্নপত্র পাবে। ভালো করে প্রশ্নপত্র পড়বে।যে যে প্রশ্নগুলো তোমার জানা আছে সেগুলিকে কাঠ পেন্সিল দিয়ে দাগ দেবে।
* পরীক্ষার খাতা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাতায় ভালো করে মার্জিন দেবে। তারপর নাম ,রোল নাম্বার ভালো করে লিখবে।পরীক্ষকের কাছে খাতা তোমার হয়ে কথা বলবে।
* উত্তর লেখার সময় কোন্ বিভাগের উত্তর লিখছো,লেখার শুরুতে মাঝখান ঘেঁষে লিখবে।
* ১ নম্বর দাগের প্রশ্নের উত্তর পূর্ণ বাক্যে বা দাগ নম্বর দিয়ে উত্তর লিখতে হবে। যেটি তোমার সুবিধা হবে সেভাবে লিখবে।আর এই প্রশ্নের কুড়িটি প্রশ্ন থাকে সবগুলোই লিখবে।
* ২ নম্বর দাগে মোট ১৬ টি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয়। প্রত্যেকটি দাগ নম্বর থেকে অবশ্য একটি করে লিখতে হবে। প্রশ্নের নির্দেশিকা অনুযায়ী উত্তর লিখবে। ম্যাপ পয়েন্টিং এর সময় কোন তাড়াহুড়ো করবেনা। প্রশ্নের যেভাবে চাওয়া হয়েছে সেভাবে ম্যাপে দাগ নম্বর সহ লিখবে। বিবৃতি ব্যাখ্যা প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় সঠিক উত্তরটি পূর্ণ বাক্যে লিখবে।
* এবার আসি ৩ নম্বর দাগে ২’নম্বর মানের প্রশ্নগুলি। এখানে বোধমূলক প্রশ্ন বেশি থাকে। এজন্যই প্রশ্ন ভালো করে পড়ে তার উত্তর লিখবে।আর অবশ্যই বাক্য সীমা মেনে চলবে।
* ৪ নম্বর দাগের প্রতিটি বিভাগ থেকে অন্তত একটি করে প্রশ্ন নিয়ে মোট ৬ টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। অযথা পয়েন্টের উপর জোর না দিয়ে প্রশ্ন অনুযায়ী উত্তর লেখার চেষ্টা করবে এবং বাক্য সীমা মেনে চলবে।
* ৫ নম্বর দাগের উত্তর লেখার সময় যে প্রশ্নটি সবচেয়ে ভালো জানা সেই প্রশ্নটি লিখবে। এখানে তোমাকে ১৫-১৬ টি বাক্যে সঠিক উত্তর দিতে হবে। এমনভাবে উত্তর লিখবে যাতে পরীক্ষক তোমার কাছ থেকে শিখতে পারে। সবশেষে বলি, একই দাগ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর পরপর লিখবে। কঠিন কঠিন বাক্য বা উদ্ধৃতি না দিয়ে নিজের ভাষায় উত্তর লেখার চেষ্টা করো। অযথা টেনশন করবে না। সময়ের আগে লেখা শেষ করে খাতা ভালো করে রিভিশন দেবে।তাতে ভুল ত্রুটি ধরা পড়ে। আশা করি এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষা সবার ভালো হবে। আগাম শুভেচ্ছা রইল।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct