সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: তৃণমূলের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে নজরুল মঞ্চের সভায় উপস্থিত হয়ে একাধিক নয়া কর্মসূচির কথা ঘোষণা করলেন তৃণমূলের চেয়ারপার্সন তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে নরমে-গরমে বিঁধলেন বিরোধিদেরকেও। বিরোধী দলের ভূমিকা নিয়ে একাধিক পরামর্শও দেন তিনি।এদিন তিনি ঘোষণা করেন ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ প্রকল্প। বলেন, দুয়ারে সরকারের মতই ‘দিদির রক্ষাকবচ’ প্রকল্প। নয়া প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে যাবে সমস্ত সরকারি পরিষেবা। আর বিনা বাধায় পরিষেবা সকলে যাতে পায় তার জন্য চালু করা হয়েছে ‘দিদির দূত’ অ্যাপ। আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে এই পরিষেবা। সকলে ঠিক মত পরিষেবা পাচ্ছে কি না তা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খতিয়ে দেখবেন তৃণমূল কর্মীরা। ‘দিদি’ বলেছেন, ১০ কোটি মানুষের বাড়িতে পৌঁছে যাবেন ৩ লক্ষ কর্মী। জনসংযোগে বোঝানো হবে, তৃণমূল পরিচালিত সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ। ৩৫০ তৃণমূল নেতানেত্রী বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় গিয়ে রাত্রিবাস করবেন। এদিন সকল কর্মীদের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জনসংযোগে জোর দেওয়ার। এরপরেই বিরোধিদের উদ্দেশ্যে সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, বাংলায় প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে। সারা ভারতে এই রকম হিংসার রাজনীতি দেখা যায় না। বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকে দেওয়া হচ্ছে বলেও সরব হন তিনি। তিনি বলেন, বিরোধী দলেরও উচিৎ রাজ্যের উন্নয়নে সামিল হওয়া। কারও নাম না করেই বলেন, ‘তার কথা না বলাই ভালো’। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেই কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি বলেন, শাসকদল এবং বিরোধী দলের সকল জনপ্রতিনিধির উচিৎ, উন্নয়নের পক্ষে নজর দেওয়া। তা না করে রাজ্যকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়।
এদিন তিনি বলেন, বাংলায় আগেও সংগ্রাম করে যেতে হত। এখনও সংগ্রাম করে যেতে হচ্ছে। বলেন, দু-একটি দল অশান্তির চেষ্টা করছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আমরাও বিরোধী দলে ছিলাম কিন্তু ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করিনি। গঠনমূলক ভূমিকা পালন করেছি’। আরও বলেন, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের দায়বদ্ধতা আছে মানুষের প্রতি। দেশের সমস্ত রাজ্যকে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, একতা ও সংহতিই শক্তি। পাশাপাশি বিজেপি ও বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রকে বার্তা দিতে ‘ফেডারেল স্ট্রাকচার’-এর কথাও বলেন তিনি। বলেন, উন্নয়নে কেন্দ্রের সহযোগিতা চাই। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গরিব মানুষ কাজ করে টাকা পায়নি’, ‘১০০ দিনের কাজে রাজ্যের প্রাপ্য ৬ হাজার কোটি টাকা’। রাজ্য ইতিমধ্যেই ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ৪৮ লক্ষ কর্মদিবস তৈরি করেছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এদিন বলেন, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সারা বিশ্বের কাছে মডেল হবে বাংলা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct