আপনজন ডেস্ক: আবাস যোজনার তালিকায় পাকা বাড়ি আছে এমন ব্যক্তিদের নাম থাকায় জোর বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সেই বিতর্ক উসকে দিয়েছে শাসক দলের বিভিন্ন নেতা কর্মী কিংবা পঞ্চায়েত পদাধিকারীদের সেই তালিকায় নাম ওঠায়। যদিও বিষয়টি নিয়ে হইচই হতেই বহু পঞ্চাযেত প্রধান বা রাজনৈতিক নেতা ইতিমধ্যে পদত্যাগের পথে হাঁটছেন। তবুও আবাস তালিকায় দলের নেতাদের নাম নিয়ে জেলায় জেলায় বেশ অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল। এ ব্যাপারে অবশ্য কড়া মনোভাব দেখিযে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কাছে খবর যেতেই পাকা বা প্রাসাদোপম বাড়ি থাকা তৃণশূলের পঞ্চায়েত প্রধান কিংবা উপপ্রধানদের অবিলম্বে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়ে দলের মুখ রক্ষা করে চলেছেন। একই সঙ্গে অভিষেক বিরোধী দলনেতাকে কাড়গড়ায় তুলছেন। অভিষেকের দাবি রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাস যোজনায় নাম বাতিল হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। তাই এ নিয়ে রবিবার তৃণমূলের নতুন কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করে বলেন, আবাস যোজনায় সবথেকে বেশি অভিযোগ আসছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে। এটি ২০২১ সালের তালিকা নয়। এটি ২০১৮-র তালিকা, ২০১৭-র তালিকা, ২০১৯-র তালিকা। সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী সবথেকে বেশি প্রায় ৪০ শতাংশ নাম বাদ গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। যে নামগুলি বাতিল করা হয়েছে, সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। দায়িত্বে কে ছিল? কোন পরিবার ছিল? প্রধান কারা নির্বাচিত করেছিল? নিশ্চিতভাবে দলীয় তরফে আমাদের ভুল হয়েছে। আমরা একজনকে বিশ্বাস করেছিলাম। সেই জন্য কাঁথির জনসভা থেকে মানুষের কাছে আমি ক্ষমা চেয়েছি। তৃণমূল কংগ্রেস যে দুর্নীতিকে কোনওভাবেই বরদাস্ত করে না, সেই কথা এদিন বার বার বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের প্রতিটি স্তরের আধিকারিকদের কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাঁরা প্রকৃত দাবিদার, তাঁরাই যেন বাড়ি পান। হতে পারে, প্রধান, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির তরফ থেকে তালিকা এসেছে। কিন্তু সেই তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা প্রকৃত যোগ্য কি না, তা যাচাই করার জন্য ছয়-আট মাস সময় লাগে। রাজ্য সরকার তা একমাসে করে দেখিয়েছি।” তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহসভাপতি প্রলয় পাল বলেন, “এখন তো অধিকারীরা নেই। এখানে অধিকারী পরিবারের কোনও ভূমিকা আছে বলে আমি মনে করি না। আবাস যোজনার তালিকা তো সদ্য প্রকাশিত হয়েছে। কে করেছে? ব্লক প্রশাসন আর জনগণের প্রতিনিধি নয় তৃণমূলের এমন লোকেরা। ব্লক প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধানদের নিয়ে এইসব করা হয়েছে।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct