নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: হাতে সময় মাত্র দেড় বছর। তার মধ্যেই বেজে উঠবে লোকসভা নির্বাচনের দামামা। উনিশের ভোটে বাংলা থেকে এসেছিল ১৮টি আসন। কিন্তু তারপরেও অধরা থেকে গিয়েছে বাংলা দখলের স্বপ্ন। এবার চ্যালেঞ্জ ওই ১৮টি আসন ধরে রাখা নিয়ে। কেননা পায়ের নীচে মাটি গিয়েছে সরে। বাংলার মানুষ নিয়েছে মুখ ফিরিয়ে। যারা বাম শিবির থেকে এসেছিলেন বড় আশা নিয়ে, তাঁরাও একে একে ফিরে যেতে শুরু করেছেন লাল পার্টিতে। নিত্যদিন দল ছাড়ছেন নেতা থেকে কর্মী, সাংসদ থেকে বিধায়কেরা। এই অবস্থায় উনিশের ভোটে জেতা ১৮টি আসন ধরে রাখার প্রশ্নে কার্যত চ্যালেঞ্জের মুখে বঙ্গ বিজেপি। তবে তাঁদের এই চ্যালেঞ্জকে কিছুটা হলেও হালকা করতে বাংলায় আসছেন মোদি-শাহ-নাড্ডারা। ২০২৩ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বিজেপির এই ৩ শীর্ষ নেতাকে দিয়ে বাংলায় মোট ৩৮টি সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পদ্মশিবির। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সভা তো নয় হবে। কিন্তু আসন কী মিলবে? বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাস থেকেই বাংলার বুকে কার্যত পদ্মের চাষ করতে নেমে পড়ছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। শুরুটা করছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা।
আগামী ৭ জানুয়ারি তিনি সভা করবেন হুগলি জেলার চণ্ডীতলাতে। তারপর একে একে আসা শুরু করবেন শাহ ও মোদি। এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, নাড্ডা ও শাহ বাংলায় ১২টি করে সভা করবেন ২০২৩ সাল থেকে ২৪ এর ভোটের সময় পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সভা করবেন মোট ১৪টি। প্রতি ৩টি করে লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে মোদির ১টি করে সভা হবে। সে হোক তা নিয়ে কারোর কোনও আপত্তি নেই। কেননা এই ৩জনকেই একুশের ভোটের সময় বাংলায় ডেলি প্যাসেঞ্জারি করতে দেখা গিয়েছে। আরও না হয় আকবার করবেন। কিন্তু যে কারণে তাঁরা আসছেন সেই আসন কয়খানি ধরে রাখতে পারবেন তাঁরা, আর নতুন করে কয়টি বা দখল করতে পারবেন, তা নিয়েই এখন প্রশ্ন ঘুরছে বঙ্গ বিজেপিতে।যে যত খুশি সভা করুন, যেখানে খুশি সভা করুন। কিন্তু আসন বের করা যে খুব শক্ত সেটা মানছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারাই। তাঁদের অভিমত, দক্ষিণবঙ্গে জেতা আসনও ধরে রাখা যাবে কিনা সন্দেহ। অর্জুন সিং তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। আসানসোল আগেই হাতছাড়া। হুগলি, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম নাগালের বাইরে। বনগাঁ আর রানাঘাটে পরিবর্তনের সম্ভাবনাই বেশি। বর্ধমান-দুর্গাপুরে জামানত বাঁচলেই অনেক। তাই দক্ষিণবঙ্গে বিজেপির সেফ সিট একমাত্র বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর ও পুরুলিয়া। অধিকারীরা এসেছেন বটে বিজেপিতে, কিন্তু তার জেরে লোকসভায় আসন জেতার খোয়াব অতি বড় অন্ধ ভক্তও দেখেন না। উত্তরবঙ্গে মালদা থেকে বালুরঘাট ও রায়গঞ্জ জোড়াফুলে মজে গিয়েছে। কিছুটা সুবিধা দিতে পারে দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার আর কোচবিহার। জলপাইগুড়িও কার্যত হাতছাড়া। সেই হিসাবে সারা রাজ্যে মাত্র ৬টি আসন থাকছে বিজেপির জন্য। দেখার বিষয় এই ৬টি আসন পদ্মশিবির মোদি-শাহ-নাড্ডার হাত ধরে দখল রাখতে পারেন কিনা নাকি সবই ঘাসফুলময় হয়ে ওঠে লোকসভায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct