আপনজন ডেস্ক: ত্রিপুরা বিধানসভার নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই সব দলের রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়ছে। বুধবার সকালে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি ছেড়ে দিলেন উপজাতীয় নেতা দিবচন্দ্র হ্রারংখাল। ব্যক্তিগত কারণে বিজেপি ছেড়েছেন বলে মন্তব্য করলেও দিবচন্দ্র হ্রারংখাল যখন রাজ্য বিধানসভায় তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিতে যান, তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য কংগ্রেসের নেতা এবং সাবেক এমএলএ আশিস কুমার সাহা। মনে করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেবেন। দিবচন্দ্র হ্রারংখালকে নিয়ে মোট পাঁচজন বিজেপি বিধায়ক দল ছাড়লেন। আর বিজেপির জোটসঙ্গী মিলিয়ে আটজন। ফলে ৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভায় বিজেপির সদস্যসংখ্যা ৩১। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩৬টি আসন পেয়েছিল। আর তাদের জোট সহযোগী আইপিএফট) পেয়েছিল আটটি আসন। আইপিএফটিরও তিনজন এমএলএ ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। বিজেপির পাল্টা দাবি নেতারা দল ত্যাগ করলেও পাল্টা দাবি করেছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। অন্য একটি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা সাংবাদিকদের বলেছেন, ত্রিপুরায় বিজেপির শক্তি কমেনি।
মুখ্যমন্ত্রী কথা বলছিলেন কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের সম্ভাব্য জোট নিয়ে। মঙ্গলবার কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এই যৌথ বিবৃতি দুই বিরোধী দল কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের কাছাকাছি আসারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। ওই যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই রাজ্যে বিজেপি সরকার গঠন করায় যে অস্বাভাবিক নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তা আগে কল্পনা করা যায়নি। এখানে সাধারণ মানুষের অধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। মানুষ একটি দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। এখানে বিরোধীদের এবং যাঁরাই প্রতিবাদ করতে গিয়েছেন, তাঁদের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। এখানে বাস্তবে একদলীয় স্বৈরচারী শাসনব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরী ছাড়াও বিবৃতিটিতে সই করেছেন কংগ্রেসের সভাপতি বিরাজিৎ সিনহা, সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক যুধিষ্ঠির দাস, রেভল্যুশনারি সোশ্যালিস্ট পার্টির (আরএসপি) সম্পাদক দীপক দেব, ফরওয়ার্ড ব্লকের সভাপতি পরেশ সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট) সম্পাদক পার্থ কর্মকার। এ বিবৃতির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেন, কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে এবং এটা নতুন কিছু নয়। গতকাল বিষয়টি শুধু সামনে এসেছে। তারা বরাবরই মানুষকে বোকা বানিয়েছেন। এখন তাদের আনুষ্ঠানিক যৌথ বিবৃতি মানুষকে আরও স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিল, আসলে তারা একসঙ্গেই রয়েছেন। এতে বিজেপির বরং সুবিধাই হলো। মানুষ এখন তাদের আর কোনো অবস্থাতেই ভোট দেবে না। পশ্চিমবঙ্গের হার থেকে তাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। তারা একই ভুল বারবার করে চলেছে। শক্তি পাচ্ছে তৃণমূলও এর পাশাপাশি কংগ্রেস ও বিজেপি ছেড়ে বহু নেতা–কর্মী ইতিমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসেও যোগ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে রাজ্যে তৃণমূলের সভাপতি পীযূষকান্তি বিশ্বাস গতকাল বলেন, রাজ্যে বিজেপির ওপর সম্পূর্ণ অনাস্থা তৈরি হওয়ার কারণেই মানুষ দক্ষিণপন্থী দলটি ছাড়ছেন। তিনি বলেন, ‘নতুন ও পুরোনো কর্মীদের নিয়ে সোনামুড়ায় আগামী ২ জানুয়ারি আমরা একটি বড় মিছিল করব। সেই সঙ্গে আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতিও শুরু হবে।’ বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে গতকাল ৮১ জন বিজেপি, সিপিআইএম এবং উপজাতীয় দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করেছে তৃণমূল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct