মোল্লা মুয়াজ ইসলাম, বর্ধমান, আপনজন: পূর্ব বর্ধমানের দুবরাজহাট গ্রামে আছে ৫০০ বছরের পুরানো প্রাচীন মসজিদ। আসামের সিলভারের হিন্দু রাজা কুষ্ঠ ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে তাকে কেউ জানান খন্ডঘোষের দুবরাজহাটে এক আল্লাহর অলি বুজুর্গ আছে। তার কাছে গেলে আপনি সুস্থ হতে পারবেন। আসামের ওই রাজা লোক লস্কর নিয়ে পৌঁছে যান দুবরাজহাটে অবস্থিত এই পীরের কাছে। ঐ রাজার নাম জানা না গেলেও পীরের নাম আব্দুল মজিদ বলে জানান বর্তমান মোতাওয়াল্লি মহাম্মদ আজফার হোসেন। রাজা আসাম সিলভার থেকে এসে পীরের কাছে জানান তার দুরারোগ্যের কথা। পীর বলেন তিনি সামান্য মানুষ তার দ্বারা আপনার কি উপকার হতে পারে। আসামের ওই রাজা নাছোড়বান্দা। তিনি অবস্থান করতে থাকেন। পীরের ওযু করার পানি রাজার শরীরে লাগলে কথিত আছে রাজা সুস্থ হয়ে যান। রাজা তখন বলেন আপনি কি চান আমার কাছে। পীর সাহেব কিছু নিতে অস্বীকার করেন। মাটির ভাঙ্গা ফুটো মসজিদ দেখে রাজা হাতি ও ঘোড়ায় টানা বড় বড় পাথর নিয়ে এই মসজিদ তৈরি করে দেন । যে পুকুরে ওযু করতেন সেটাও বড় পুকুর ও সান বাঁধানো ঘাট তৈরী করে দেন যা আজও আছে। বর্তমানে মসজিদের মতোয়াল্লি হাজী আজফার হোসেন সাহেব। তিনি সুন্দরভাবে মসজিদ পরিচালনা করছেন। মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সহ বিভিন্ন সামাজিক কাজ ও করা হয়। এই মসজিদের এক সময় মোতাওয়াল্লী ছিলেন দক্ষিণ দামোদরের বিশিষ্ট আলেম মাওলানা আসাদ সাহেব। পূর্ব বর্ধমানের অন্যতম প্রাচীন এই মসজিদ। পরবর্তী ক্ষেত্রে মেরামত করা হয়েছে যা এলাকার মিস্ত্রি আজের এক হিন্দু রাজমিস্ত্রি বংশী বাগদির হাত ধরে । ইতিহাসের ছাত্র গবেষকদের কাছে অন্যতম বিষয়বস্তু এই মসজিদ। ৫০০ বছরের পুরানো সম্প্রীতির নিদর্শন এই মসজিদ আজও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct