মোল্লা মুয়াজ ইসলাম, বর্ধমান, আপনজন: খণ্ডঘোষের বাদুলিয়ায় কয়েকশো বছর আগে গড়ে উঠেছিল প্রাচীন বাদুলিয়া জামে মসজিদ। গ্রামের মানুষের উদ্যোগে সেই মসজিদ ছিল মাটির তৈরি। সেই সময় ওই গ্রামে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের এক মৌলানা সাহেব গ্রামের বাচ্চাদেরকে কোরআন শিক্ষা দিতেন দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকে । ওই মাটির মসজিদের ইমাম ছিলেন তিনি । পরবর্তী ক্ষেত্রে মাটির মসজিদের উপর গড়ে ওঠে পাকা মসজিদ। এই মসজিদ তৈরিতে বিশেষ অবদান রাখেন বাদুলিয়াবাসি মুন্সি বদরে আলম । গ্রামের মানুষদের সহযোগিতায় পাকা মসজিদ তৈরী করেন। মুতাওয়াল্লী ও হয়েছিলেন মুন্সী বদরে আলম । তার পরবর্তী ক্ষেত্রে ওই মসজিদে ইমামতি করেন আব্দুর রহমান যিনি ৫১ বছর ওই মসজিদের ইমামতি করেন। সুদূর দক্ষিণ পরগনার জয়নগরে বাড়ি এই ইমামকে বিদায়কালে বাদুলিয়া গ্রামবাসী এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। বৃদ্ধ বয়সে ইমামদের অনেক দুরবস্থা হয়। আর্থিক ভাবে দুর্বল বৃদ্ধ ইমামদের শেষ সময়টা খুব খারাপ যায়। ৫১ বছর ইমামতি করার পর গ্রামের মানুষ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা এবং অসংখ্য উপঢৌকন দিয়ে বড় মাত্রায় সম্মান জানিয়ে বাসে করে গ্রামবাসী মিলে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে ছিলেন। ইমামের এই বিদায় গোটা জেলা তথা রাজ্যে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাদুলিয়াবাসী। বর্তমানে যুব প্রজন্ম মসজিদ কমিটির পক্ষে মুন্সী কাইজার, আব্দুর রহমান মন্ডল, সোয়েব আলি দায়িত্ব নিয়ে গ্রামবাসীর সাহায্যে মসজিদকে আরও আধুনিক রং চং করে মসজিদে শ্রীবৃদ্ধি ঘটিয়েছেন। মসজিদে প্রায় ৩০ বিঘে সম্পত্তি মসজিদের নামে আছে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও অন্যান্য সামাজিক কাজও মসজিদ থেকে করা হয়। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ খণ্ডঘোষের অন্যতম প্রাচীন মসজিদ। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ সদস্য তথা খন্ডঘোষের বিশিষ্ট ব্যাক্তিত্ব অপার্থিব ইসলাম এই গ্রামের মানুষ। মসজিদ আধুনিকি করণে তার উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা আছে। পূর্ব বর্ধমানের আর এক জেলা পরিষদ সদস্য বিশ্বনাথ রায় এই মসজিদের কাছেই বাড়ি। তিনিও এখানকার মানুষের সুখদুঃখের সাথী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct