সেখ রিয়াজুদ্দিন ও আজিম সেখ, বীরভূম, আপনজন: সিবিআই হেফাজতে লালন সেখ এর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তার পরিবারের পাশে দাড়াতে এবং সমবেদনা জানাতে রবিবার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে পৌঁছান বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। সাংসদকে তাদের বাড়িতে দেখেই আপ্লুত লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি। সাংসদের হাত ধরে বলেন, ”শোকাহত পরিবারের পাশে আপনিই প্রথম এগিয়ে এলেন। এখনও তো কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়নি। আমরা রাজ্যের উপর, বিচারব্যবস্থার উপর ভরসা রেখেই আইনি লড়াই লড়ছি” । বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শতাব্দী রায় এক সাক্ষাৎকারে বলেন লালন সেখ এর স্ত্রী সিবিআই এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।তার স্বামী তাকে সিবিআই কতৃক বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের কথা শুনিয়েছেন,এমনকি তার শরীরের মধ্যে আঘাতের চিহ্ন ও পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।দিদি (মমতা ব্যানার্জি) ,অভিষেক ব্যানার্জী এবং এসপি র সাথে কথা বলে দেখছি। সবরকমভাবে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছি।উল্লেখ্য গত ২১ শে মার্চ বীরভূম জেলার বগটুই কাণ্ডের ঘটনায় আজও শিউরে ওঠে মানুষের মন। রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু সেখ আততায়ীর ছোড়া বোমা ও গুলিতে নিহত হন। প্রতিশোধ নিতেই অগ্নিসংযোগ সহকারে দশজন ব্যাক্তির পুড়িয়ে মারার প্রেক্ষিতে রাজ্য রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠে।
সেই থেকে ঘটনার তদন্ত ভার নিয়ে ও রাজ্য কেন্দ্রের মধ্যে চলে টানাপোড়েন। শেষ পর্যন্ত তদন্তের ভার গ্রহণ করেন সিবিআই। আসামীদের ধরপাকড়ের পাশাপাশি নিজেদের হেফাজতে নিয়ে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। সেইরকমই বগটুই অগ্নিসংযোগের মূল অভিযুক্ত লালন সেখ দীর্ঘদিন ফেরার থাকার পর গত ৩ রা ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পাকুড় থেকে সিবিআই তাকে গ্রেফতার করে আনে। এবং পরদিন রামপুরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হয়।তদন্তের স্বার্থে সিবিআই পর পর দুদফায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেয়। হেফাজতে থাকাকালীন গত ১২ ডিসেম্বর শৌচাগার থেকে লালন সেখ এর ঝুলন্ত অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।এনিয়ে মৃত লালন সেখ এর পরিবার পরিজন সহ গ্রামবাসীদের মিলিত জোট জাতীয় সড়ক অবরোধে সামিল হয়।টায়ার জ্বালিয়ে চলে অবরোধ।সিবিআই এর রামপুরহাটের অস্থায়ী দপ্তরের সামনে অভিযুক্ত অফিসারদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শনও করা হয়। সিবিআই এর উপর আস্থা হারিয়ে সিআইডি তদন্তের দাবি তোলেন লালন সেখ এর স্ত্রী রেশমা বিবি। সেই মোতাবেক সিবিআই হেফাজতে মৃত লালন সেখ এর রহস্যজনক মৃত্যুর তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডি।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct