আপনজন ডেস্ক: বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচটা নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ থাকে না। সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া দুদল ভাঙা মন নিয়ে খেলতে নামে এই ম্যাচটা। তৃতীয় হতে পারলে ভালো, না হলেও ক্ষতি কিছু নেই–––এমন মনোভাবই থাকে দলগুলোর। তবে মাঠে নেমে জয়ের চেষ্টা করে ঠিকই। আজ কাতারের খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে জয়ের জন্যই ঝাঁপিয়েছে ক্রোয়েশিয়া–মরক্কো। দুদলের ফুটবলারদের মধ্যে দেখা গেছে উত্তেজনাও। তুমুল লড়াই শেষ পর্যন্ত ২–১ গোলের জয়ে হেসেছে গতবারের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়াই। ১৯৯৮ সালে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়ার ২৪ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে তৃতীয় হলো ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ তৃতীয় হওয়ার রেকর্ডটা অবশ্য চারবারের বিশ্বসেরা জার্মানির। চারবার তারা তৃতীয় হয়েছে। ক্রোয়েশিয়া ও মরক্কো এবার নকআউটে উঠেছে একই গ্রুপ থেকে। গ্রুপ পর্ব দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের ফল ছিল গোলশূন্য। তবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটেই ভিন্ন ছবি। রোমাঞ্চ ছড়িয়ে তখনই স্কোরলাইন ১–১। দুটি গোলেরই উৎস ফ্রি কিক। দুটি গোলে মিল আছে আরও। ফ্রি কিক থেকে বল জালে গেছে দুজনের মাথা হয়ে। দুই গোলদাতাই ডিফেন্ডার এবং দুজনেরই জার্সি নম্বর ২০। সপ্তম মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার ফ্রি কিকে ইভান পেরিসিচের হেডে বল বাতাসে রেখে ইওস্কো গাভারলিওল জালে পাঠান। নবম মিনিটে মরক্কোর ফ্রি কিক ক্রোয়েশিয়ার এক খেলোয়াড় হেডে ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বল আসে গোলমুখে। সেই বল হেডে জালে পাঠাতে ভুল করেননি এই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা রাইটব্যাক আশরাফ দারি। সমতার পর ক্রোয়েশিয়ার ওপর চাপ তৈরি করেছিল মরক্কো। রক্ষণ থেকে উঠে এসে হাকিমি প্রতিপক্ষের গোলমুখে বিপজ্জনকভাবে বল ফেলেছিলেন দুবার। গোল না পেলেও আক্রমণ চালিয়ে যায় মরক্কো। কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়ে ৪২ মিনিটে গোল করে বসে ক্রোয়েশিয়া। বাঁ দিক থেকে ফরোয়ার্ড মিসলাভ ওরসিচে মরক্কোর গোলকিপার ইয়াসিন বুনুর মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠান পোস্টে লাগিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেও আর পারেনি মরক্কো। ফলে জয় দিয়েই নিজেদের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ শেষ করেছে ক্রোয়েশিয়া, যার মধ্যে তিনবারই তারা খেলেছে শেষ চারে।
মরক্কোরও এটি ছিল ষষ্ঠ বিশ্বকাপ। ১৯৮৬ সালে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলা ছিল এত দিন দলটির সেরা সাফল্য। বিশ্বকাপের শেষ চারে ওঠা দারুণ সাফল্য মরক্কোর জন্য। তবে আশরাফ হাকিমিদের রূপকথার দৌড় সেমিফাইনালে থামিয়ে দেয় ফ্রান্স। আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে মরক্কোর বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা হয়নি তাতে। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের আগে মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই বলেছিলেন, তাঁরা সেমিফাইনালে হেরে হতাশ। তবে চতুর্থ স্থানের চেয়ে তৃতীয় স্থানে থাকাটা কৃতিত্বের। কিন্তু তৃতীয় নয়; চতুর্থ হয়েই স্বপ্নের যাত্রা শেষ করেছে মরক্কো।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct