নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, আপনজন: শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে জামাআতে ইসলামী হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের শাখার উদ্যোগে মিডিয়া গেট টুগেদার অনুষ্ঠিত হল। এই গেট টুগেদারে জামাআতের ইসলামী হিন্দের সংগ্রামের ৭৫ বছর পথপরিক্রমাকে সামনে রেখে আলোচনা পেশ করেন জামাআতের সরবভারতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর মোঃ সেলিম ইঞ্জিনিয়ার। এছাড়াও বক্তব্য পেশ করেন আমীরে হালকা মাওলানা আব্দুর রফিক। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য মিডিয়া সম্পাদক ডা. মশিহুর রহমান সাহেব, রাজ্য বিভাগীয় সম্পাদক মাওলানা তাহেরুল হক, সাদাব মাসুম প্রমুখ। সেলিম ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ভারতবর্ষের নাগরিকরা নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এই সমস্ত চ্যালেঞ্জের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল সাম্প্রদায়িকতা, ঘৃণা-বিদ্বেষ ও বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ ও বিদ্বেষের বাতাবরণ। এছাড়া সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা হল জনগণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি। সেলিম আরও বলেন, ভারতীয় সমাজের নির্যাতিত ও পশ্চাদপদ গোষ্ঠীর পক্ষে আওয়াজ ওঠানো এবং তাদের জন্য প্রদত্ত সাংবিধানিক অধিকারকে বলবৎ করার দায়বদ্ধতা একটি বড় প্রশ্নের আকার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, ব্রিটিশের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ভারত গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এই গণতন্ত্র মানে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নয়, সবার অধিকারের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা হল গণতন্ত্রের আসল কথা। শক্তিশালী সমাজের নিদর্শন হল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সংযুক্তি। উগ্রপন্থা, উগ্র জাতীয়তাবাদ ও সাম্যের অধিকারকে পদদলিত করা মানে হল সমাজকে ভিতর থেকে দুর্বল করা, গণতন্ত্র ও মানবীয় মূল্যবোধকে আঘাত করা। দুর্নীতি, পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি, জাতপাত, ঘৃণা এবং সাম্প্রদায়িকতা রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশে পরিণত হয়েছে। ক্ষয়িষ্ণু রাজনীতি ও ভারসাম্যহীন অর্থনীতি দেশের জনগণের প্রয়োজন ও আশা-আকাঙ্খা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
দেশের সাম্প্রদায়িক অরাজকতা নিয়ে সেলিম বলেন, একটি বড় রাজনৈতিক দলের সংখ্যালঘুদের প্রতি শত্রুতা এবং স্বৈরাচারী মানসিকতা সবার কাছে এখন স্পষ্ট। গেট টুগেদারে আমীরে হালকা মাওলানা আব্দুর রফিক বলেন, বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সদ্ভাব তৈরি ও আলাপ-আলোচনার পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। তবেই শান্তি ও সম্প্রীতি আসবে। জামাআত সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। জামাআত মনে করে ধর্মের অপব্যবহার করে সমাজে শান্তি বিঘ্নিত হয়েছে। সমাজের পুনর্গঠনে ধর্মকে গঠনমূলক ভূমিকায় নিয়ে আসতে হবে – জামাআতের আহ্বান এটাই। উগ্রপন্থা পরিহার, সহিষ্ণুতা এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদানকে জামাআত অপরিহার্য মনে করে। জামাআত ধর্মের প্রচারে বিশ্বাসী। তবে প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই তা করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আমীরে হালকা বলেন,জামাআত সকল নাগরিকের জন্য সুবিচার কায়েমের লক্ষ্যে কাজ করে আসছে। এর জন্য বিভিন্ন এনজিও, সুশীল সমাজ ও মানবাধিকার কর্মীদের সাথ দিয়েছে, তাদের সহযোগী হয়েছে।জামাআত সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিচার, সাম্য এবং পশ্চাদপদ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে আওয়াজ ওঠায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct