সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ প্রকল্প নিয়ে রাজ্যজুড়ে অসংখ্য অভিযোগের মাঝেই এক অন্য ছবি বাঁকুড়ায়। বাঁকুড়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের গোপীনাথপুর উপর পাড়ার বীরেন লোহ সরকারি অর্থানুকূল্যে ‘বাংলার বাড়ি’ অর্থাৎ এইচ.এফ.এ প্রকল্পে পাওয়া বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। এবিষয়ে কাউন্সিলর বাঁকুড়া পৌরসভার পৌর প্রধান ও পৌর নির্বাহী আধিকারিক সহ অন্যান্যদের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগকারী বাঁকুড়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশীষ লাহার দাবি, ঐ উপভোক্তা এক ব্যবসায়ীকে ১৭ লক্ষ টাকায় ঐ বাড়ি বিক্রি করলেও রেজিস্ট্রির সময় তার চেয়ে অনেক কম মূল্য দেখিয়েছেন। সরকারী প্রকল্পে ও অর্থানুকূল্যে তৈরী বাড়ি এভাবে বিক্রি করা যায়না, এই কাজ সম্পূর্ণ বেআইনি।
বিষয়টি তিনি প্রশাসনিক স্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে জানান। ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে সরকারী প্রকল্পে পাওয়া ‘বাড়ি বিক্রি’র অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত বীরেন লোহ। তিনি বলেন, লটারী বিক্রি করে সংসার চালাই। সম্প্রতি লটারী ব্যাবসাতে লোকসান চলছিল, তাছাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত ঝামেলাতেও জড়িয়েছিলেন। ঐ জায়গায় বসবাস করলে ‘প্রাণ সংশয়’ ছিল, তাই বাড়ি বিক্রির টাকায় অন্যত্র বাড়ি কিনে তিনি বসবাস করছেন বলে দাবি করেন। ক্রেতা সন্দীপ দাস বলেন, সমস্ত নিয়ম কানুন মেনে আট লক্ষ টাকাতে ঐ বাড়ি কিনেছি। রেজিস্ট্রি হয়েছে, পর্চাও রয়েছে। কেউ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে নিজের বাড়ি বিক্রি করতেই পারে। যদি ‘আপত্তি’ থাকে তাহলে সরকারীভাবে আগে বাধা কেন দেওয়া হয়নি সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এপ্রসঙ্গে পৌর দপ্তরের জয়েন্ট ডিরেক্টর জলি চৌধুরীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সাধারণভাবে সরকারী প্রকল্পে তৈরী বাড়ি বিক্রি করা যায়না। এরকম কয়েকটা অভিযোগ এসেছে। পৌরসভাকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে বলে তিনি জানান এ প্রসঙ্গে বিজেপির বাঁকুড়া জেলা সহ সভাপতি দেবাশীষ দত্ত তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’র অভিযোগ এনেছেন। এই ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি যে বা যারা যুক্ত তাদের গ্রেফতারির দাবিও জানান তিনি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct