নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, আপনজন: কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে মঙ্গলবার উঠে খড়গপুর আইআইটিতে ফৈজান আহমেদের রহস্য মৃত্যু সংক্রান্ত মামলাটি।এদিন আইআইটি খড়্গপুরের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় আরও কড়া কলকাতা হাইকোর্ট। 'কলেজ অধিকর্তাকে হাজিরা দিতেই হবে আদালতে', এদিন জানালেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার। এদিন শুনানিতে তিনি বলেন, -'ওই ছাত্রের মৃত্যুর জন্য কলেজের উদাসীনতাই দায়ী।তাই কোনওভাবেই আদালতে হাজিরা এড়ানো যাবে না'। উল্লেখ্য , গত ১৪ অক্টোবর ওই ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের সিঙ্গেল বেঞ্চ আইআইটি খড়্গপুরের অধিকর্তাকে তলব করে। আগামী ২০ ডিসেম্বর হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত । হাজিরার নির্দেশ নতুন করে আবেদন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই আবেদন মেনে আগামী ২৪ জানুয়ারি দিন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিন এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেন,-' নতুন করে রিপোর্ট দেওয়ার আবেদন গ্রহণ করলেও অধিকর্তাকে হাজিরা দিতেই হবে। ২০ ডিসেম্বর না হোক ২৪ জানুয়ারির মধ্যে আদালতে আসতে হবে তাঁকে'। বিচারপতি খড়্গপুর আইআইটির আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন,- 'আপনার ডিরেক্টর বিভ্রান্ত করেছে আদালতকে। এটা তথ্য লুকোনোর ঘটনা। তাঁকে আসতেই হবে। তিনি কি আইনের ঊর্ধ্বে? আপনার ডিরেক্টর যা করেছেন, সেটা একেবারে কোর্টকে ভুল দিকে চালনা করার চেষ্টা। এর জন্য যতদূর ক্ষমতা প্রয়োগ করা যায় আদালত সেটা করবে।'খড়্গপুর আইআইটির আইনজীবী বিচারপতির উদ্দেশে আবেদন করেন, -' খোলা এজলাসে এমন হলে ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটমেন্ট প্রভাব পরবে। তাই এটা যাতে না প্রকাশ না হয় সেই নির্দেশ দিন।' এর প্রতুত্তরে বিচারপতি বলেন, 'এটা তাঁর আগে মনে রাখা উচিত ছিল। ছাত্র ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তাঁরই এগিয়ে আশা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তিনি সেটা না করে চরমভাবে বিচার ব্যবস্থাকে লঘু করার চেষ্টা করেছেন।' কোনওভাবেই যে কলেজ কর্তৃপক্ষের আবেদন মানা হবে না, এদিন স্পষ্ট করে দেয়আদালত। আইআইটির ডিরেক্টরের হাজিরা আটকাতে এদিন নতুন রিপোর্ট দেওয়ার সুযোগ চাওয়া হয় আইআইটির আইনজীবীর তরফে। সেই সুযোগ দিলেও ডিরেক্টরকে আগামী ২৪ জানুয়ারি আদালতে হাজিরা দিতে হবে বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার। চলতি বছরের গত ১৪ অক্টোবর খড়্গপুর আইআইটি-র হস্টেলের ঘর থেকে এক ছাত্রের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। আসামের গুয়াহাটির বাসিন্দা ফয়জান আহমেদ নামে ওই পড়ুয়া বি.টেক মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের পড়তেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর মৃত্যু ঘিরে ব্যাপক চাপানউতর চলছিল। ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে দেহ শনাক্ত করতে এসে বলেছিলেন মৃতের বাবা।এরপর কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দাখিল করেন তাঁরা। স্থানীয় থানার বিরুদ্ধে মামলার তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ মৃত ছাত্রের পরিবারের।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct