এম মেহেদী সানি, স্বরূপনগর, আপনজন: ১২ ডিসেম্বর বাংলার অ্যাথলেটিক টিমের ম্যানেজার হয়ে বাংলাদেশে পাড়ি দিতে চলেছেন উওর ২৪ পরগণা জেলার চারঘাটের ভূমিতলার অ্যাথলেট ইসমাইল সরদার৷ বয়স পঞ্চাশের কোঠায়, তবুও এখনও নিয়ম করে চলে শরীরচর্চা। পাশাপাশি এলাকার ক্রীড়াপ্রেমী নতুন প্রজন্মের কাছেও তিনি বেশ জনপ্রিয়। দেশের বাইরে বাংলার নাম উজ্জ্বল করতে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন ইসমাইলবাবু। এশিয়া মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে অ্যাথেলেটিকরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে বাংলাদেশে আসছেন। তাই এই সফর বাড়তি চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্বরূপনগর থানার চারঘাটের ভূমিতলার বাসিন্দা প্রবীণ এই অ্যাথেলেট।
ছেলেবেলা থেকেই খেলাধুলোর প্রতি ঝোঁক ছিল ইসমাইল সরদারের। পড়াশুনার পাশাপাশি চলত অনুশীলন। পরিবারের করুণ আর্থিক অবস্থার কারণে ঠিক মতো প্রশিক্ষণ জোটেনি। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর অবস্থায় থাকা পরিবারে মানুষ হয়েও নিজের প্রতিভাকে নষ্ট করেননি তিনি। প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ হলেও, ইসমাইল স্বপ্ন দেখতেন তিনি একদিন দেশের নামকরা অ্যাথেলেটিক হয়ে উঠবেন। স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখার আকাঙ্খা থেকেই ইসমাইল পা রাখেন কলকাতার বুকে। পেয়েছেন বহু স্বনামধন্য কোচের সান্নিধ্য। এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা এই প্রতিভাধর অ্যাথলেটিককে। ১৯৮৯ সালে তিনি হয়ে যান ন্যাশানাল চ্যাম্পিয়ন। এরপর ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করে তিনি তার প্রতিভা দেখিয়ে নজর কেড়েছিলেন তামাম দেশবাসীর। নব্বইয়ের দশক থেকে রাজ্য, দেশ, বিদেশের একাধিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে নিয়ে বাংলার ক্রীড়াজগতের গর্বের মুকুটে জুড়েছেন একের পর এক পালক। ইসমাইল সরদারের সারাজীবনের নজরকাড়া সাফল্যের পরিসংখ্যান ও তার খেলার প্রতি একাগ্রতা দেখে বাংলার অ্যাথেলেটিক ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী দলের ম্যানেজার করা হয়েছে তাকে। ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরে গিয়ে এশিয়ার অনান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সফল হয়ে বাংলার ক্রীড়াজগতের সুনাম ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলাই এখন মূলমন্ত্র বর্ষিয়ান এই অ্যাথেলেটিক ইসমাইল সরদারের।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct