এম মেহেদী সানি, বনগাঁ, আপনজন: উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে রবিবার মতুয়া সম্প্রদায় অধ্যুষিত ঠাকুরনগরে অনুষ্ঠিত হলো জনসভা। ঠাকুরনগর স্টেশন সংলগ্ন খেলার মাঠে তৃণমূলের ওই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সহ একাধিক বিধায়ক এবং তৃণমূল রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বরা। রাজ্যের বন ও অচিরাচরিত শক্তি দপ্তরের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওই জনসভা থেকে তৃণমূলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিজেপিকে নিশানা করে কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘একটা ৩৪ বছরের ছেলের সঙ্গে দিল্লির লোকেরা লড়াই করতে পারছে না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ওরা লড়াই করতে পারছে না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এখন অভিষেকের আতঙ্কে ভুগছেন! যার জন্য মাঝে মধ্যে উনি বলে ফেলছেন ডিসেম্বরটা কী হবে! গতকাল ছিল গভীর ষড়যন্ত্র। অভিষেককে গতকাল মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র ছিল ওদের, জেনে রেখে দিন। ওরা পরিকল্পনা করেছিল’ বলে মন্তব্য করেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
তিনি আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইছেন শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ ১৪ ইঞ্চি কাচি নিয়ে বসে আছে। বিজেপি এবং আরএসএস-এর লড়াই চলছে। শান্তি,সম্প্রীতি,উন্নয়নের নিরিখে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি ফুলঝুরির মত হাওয়া হয়ে যাবে। এই অঞ্চলে কয়েকদিন আগে বসন্তের কোকিলের মত বিজেপির কয়েকজন চুনোপুটি নেতা বাজার গরম করতে চেয়েছিল। তার প্রতিবাদ যেভাবে এলাকাবাসী করেছে তা অত্যন্ত প্রসংশনীয়। ঠাকুরনগরের এই জনসভা প্রমাণ করে দেয় বিরোধীদের এই অঞ্চলে কোন স্থান নেই। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন ও লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী দলকে ভারত মহাসাগরে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হবে ভোটাধিকারের মাধ্যমে। এই ঠাকুরনগরের ভূমি পবিত্র মাটি, যেখানে বড়মা বিনাপাণী দেবী সহ অনেক পূজনীয় মানুষের আবির্ভাব হয়। কেউ যদি এই ভূমিকে অপবিত্র করতে চায় তার যোগ্য জবাব দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মীরা।’
রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘বিজেপি ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িকে ঘিরে রাজনীতি করে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ঠাকুরবাড়িকে ঘিরে কোনো রাজনীতি করেনি, কখনও করবে না। ঠাকুরনগরে এসে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সম্প্রতি যেসব ভাষা বলে গেছেন এবং বলছেন, আমার মনে হয় বাংলায় কোনো নেতা কখনও কোনোদিন ব্যবহার করেননি বলেও মন্তব্য করেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতি,নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সহ একাধিক জনমানষ বিরোধী নীতি নিয়ে এদিন ঠাকুরনগরের সভা মঞ্চে সুর চড়ালেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। পাশাপাশি মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন সংসদ তথা মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশের সংঘাধিপতি মমতা ঠাকুর সিএএ এর বিরোধিতা করে বলেন, ‘আমরা বেঁচে থাকতে কাউকে বিতাড়িত হতে দেবো না। নাগরিকত্ব দেওয়া শুরু করুন দেখুন আমরা কি করতে পারি।’ রবিবার অনুষ্ঠিত তৃণমূলের জনসভায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বিধায়ক নারায়ন গোস্বামী, বীণা মন্ডল, তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, প্রাক্তন সাংসদ মমতা ঠাকুর, জেলাপরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূলের বিশিষ্ট শিক্ষক নেতা একেএম ফারহাদ সহ তৃণমূলের বহু নেতা কর্মী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct