আজাহার উদ্দিন, বর্ধমান, আপনজন: সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা জুড়ে সংখ্যালঘু আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সেই রকম এক অত্যাধুনিক উন্নতমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না থানার মাছখান্ডা মূলকাঠিতে অবস্থিত বর্ধমান আল আমিন মিশন। খালেরপুল সংলগ্ন ঐতিহাসিক মূলকাঠী গ্রাম। বহু ইতিহাসের সাক্ষী এই বর্ধমান। যোগাযোগের অন্যতম পীঠস্থান ও শহরের বহু মানবের মিলনক্ষেত্র। শান্ত মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে এই মিশন।এ মিশন দেখতে দেখতে ২২ বছর অতিক্রান্ত করল। আজ তা বৃহৎ পরিবার নিয়ে গড়ে উঠেছে এই মিশন। এখন মিশনের ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা বারোশোর অধিক। শিক্ষক শিক্ষিকা সহ অশিক্ষক কর্মচারীদের সংখ্যা ১৫০ এর অধিক।মিশনারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ার ফলে অভিভাবকদের মধ্যে শিক্ষার হার বৃদ্ধি ঘটেছে। কারণ এই মিশনারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীকে ভর্তি করলে আধুনিক বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা যেমন পায় তার সাথে সাথে দ্বীনি শিক্ষা ও মূল্যবোধের শিক্ষাও দেওয়া হয়। শিক্ষা আনে চেতনা, চেতনা ঘটায় বিপ্লব। এই বর্ধমান আল-আমিন মিশনে নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা হয়। নার্সারি বিভাগ আলাদা, বয়েজ বিভাগ আলাদা, গার্লস বিভাগও আলাদা, সমস্তটাই প্রাচীর বেষ্টিত মধ্যে আছে, সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো মিশনের মধ্যে ফুলের বাগানের সমাহার বিভিন্ন রকমের ফুলের বাগান। এছাড়াও স্কুল বিল্ডিং ,হোস্টেল বিল্ডিং, সুষম খাবার, মসজিদ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বন্দোবস্ত ,দৈহিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা মনোরম পরিবেশ। বিভিন্ন মনিষী ও সাহিত্যিকদের নিয়ে আলোচনা ও শিক্ষামূলক ভ্রমণ এর ফলে ছাত্রছাত্রীদের দৈহিক ও মানসিক বিকাশ বৃদ্ধি ঘটে। উন্নত মানের বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাব, অত্যাধুনিক লাইব্রেরী মিশনে সিসিটিভি আছে । ২৪ ঘন্টা ছাত্র-ছাত্রীদের উন্নতমানের কঠোর অনুশীলন ও পরিশ্রমের মাধ্যমে পাঠদান দিয়ে চলেছেন মিশনের শিক্ষক-শিক্ষিকা।এই মিশন থেকে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বের হয়েছে সমাজের বুকে আজ তাঁরা প্রতিষ্ঠিত। বর্ধমান আল-আমিন মিশনের সম্পাদক আসফার হোসেন কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে বলেন আজকে বর্ধমান আল আমিন মিশনের এত ব্যাপ্তি হত না যদি না বিশিষ্ট শিল্পপতি শিক্ষাদরদী আলহাজ্ব মোস্তাক হোসেন সাহেবের আর্থিক সাহায্য ছাড়া। দু হাত ভরে তিনি সাহায্য সহযোগিতা করে গেছেন। এর পাশাপাশি প্রাক্তন আইএএস আলহাজ শেখ নুরুল হক পড়াশোনা মান উন্নয়নের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে তিনি ক্লাস নেন।এছাড়াও বিভিন্ন সহৃদয় ব্যক্তিবর্গ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ও শিক্ষা দরদী মানব দরদী বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে পাশে থেকেছেন বিভিন্নভাবে তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। বৃহৎ কর্মকাণ্ডের মধ্যেও ৪০০ জন ছাত্রছাত্রী বিনা বেতনে পড়াশোনা করছে। মেধাবী ও দুস্থ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য জিডি স্কলারশিপ এর ব্যবস্থাও আছে। এছাড়াও রাজ্য সরকার সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর থেকেও সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছি। আগামী দিনে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল খোলার চিন্তাভাবনা চলছে এবং নিটের কোচিং শুরু হয়েছে। প্রতিবছর এই মিশন থেকে ভালো রেজাল্ট করে ছাত্রছাত্রীরা আজ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হয়ে মিশনের সুনাম মুখ উজ্জ্বল করেছে। গরিব অসহায় দুস্থ দরিদ্র মেধাবীদের পাশে সর্বদা পড়াশোনার জন্য দরজা খুলে রেখেছে জানালেন বর্ধমান আল-আমিন মিশনের সম্পাদক আসফার হোসেন। পাশাপাশি শিক্ষা আন্দোলন কে আরো গতিশীল করতে সমাজে সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসার আসার তিনি আহ্বান জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct