মোবাইল ও বিপন্ন শৈশব
সুবিদ আলি মোল্লা
প্রযুক্তি নির্ভর যুগে শিশু থেকে শুরু করে বড়রা সবাই একটু বেশি করে মোবাইল নির্ভর হয়ে পড়ছে। সময় বাঁচাতে আমরা সবাই মোবাইলের ব্যবহার করি । অফিসে জরুরী কাজকর্ম সারতে মোবাইল তো ব্যবহার তো হয়ই। বাড়ির কাজকর্ম বাদে বাকি সময়টা এখন বড়দের মোবাইল স্ক্রিনে কেটে যায়। হয় সিরিয়াল অথবা ফেসবুক। শিশুরা বরাবরই অনুকরণ প্রিয়। মা বাবাকে মোবাইলে ব্যস্ত থাকতে দেখে তাদের মনেও কৌতূহল উদ্রেক হয়। সাত-আট মাস বয়সের শিশু থেকে এই কৌতূহলের শুরু। এখনকার সময়ে খুব পরিচিত দৃশ্য : মা শিশুকে খাওয়াচ্ছেন, মোবাইলে কার্টুন চলছে। প্রশ্ন করলে মায়েদের গর্বিত হাসি মেশানো উত্তর জানেন,” আমার বাচ্চাটা একদম খেতে চায় না। এত সময় কোথা বলেন তো? দেখুন কার্টুন দেখতে দেখতে দিব্যি খেয়ে নিচ্ছে। কম সময় বেশি কাজ। “বিষবৃক্ষ গোপনে রোপণ হয়ে গেল শৈশবে। শিশু বড় হচ্ছে কিন্তু খেলতে চায় না । মোবাইল হাতে পেলেই শান্ত। কোন গোলমাল করে না। ঘরের কোণে চুপটি করে কেটে যায় বিকেলবেলা । যে বয়েসে বন্ধুদের সাথে খেলবে, গল্প বই পড়বে, ছবি আঁকবে, খবরের কাগজ পড়বে, বাইরের দুনিয়াকে জানবে সেই বয়েসে সে বন্দি হয়ে আছে মোবাইল স্ক্রীনে। দীর্ঘক্ষণ মোবাইল স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে দৃষ্টি শক্তির ক্ষতি হচ্ছে। খাবার পরিপাকের ক্ষেত্রেও সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে শিশুদের কল্পনা শক্তি ও দুরন্তপনার শৈশব। এই সমস্যার সমাধানে বাবা-মাকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। সময় দিতে হবে তাদের শিশুকে; তাদের সঙ্গে খেলা করা ,গল্প করা। খাওয়ার সময় বাচ্চার হাতে মোবাইল একদম নয় বরং বাচ্চাকে গল্প বলতে বলতে খাওয়ানো অনেক বেশি ভালো। মা বাবা এক ঘরে, সন্তান এক ঘরে। নীরব ঘাতকের হাতে হত্যা হয়ে চলেছেন মা-বাবা ,সন্তান সকলে। এই দৃশ্যের অবিলম্বে পরিবর্তন প্রয়োজন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct