দেবাশীষ পাল, মালদা, আপনজন: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করতে জেলাজুড়েই ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়েছে গেরুয়া শিবির। মালদহে তৃণমূলের তরফ থেকে এমনই অভিযোগ উঠে আসছে বারবার। এবার সেটাই হাতেনাতে প্রমাণ করার দাবি করল মালদহের গাজোলের বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব। অভিযোগ, ওই পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্যকে নানান প্রলোভনে ফেলে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেয় স্থানীয় বিজেপির একাংশ। আর সেই সই-কে হাতিয়ার করে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসনে লিখিত নালিশ জানানো হয়। তা জানতে পেরেই ওই তৃণমূল সদস্য জেলা প্রশাসনিক ভবনে ছুটে এসে অভিযোগ প্রত্যাহার করেন। ওই সদস্যের অভিযোগ, বিজেপির লোকজন ষড়যন্ত্রের কাজে তাঁর সই ব্যবহার করেছেন। যদিও এই বিষয়ে বিজেপির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। গাজোলের বাবুপুরে বিজেপির এই ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দিয়েছেন বলে দাবি করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের বদনাম করার ততই চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু এতে বিজেপির কোনও লাভ হবে না। ব্লক প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, গাজোলের বাবুপুরে তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পরও তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কী পদক্ষেপ করা যায়, তা জানতে জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের মতামত চাওয়া হয়েছে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ ঘিরে এখন তুলকালাম গাজোলের বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা।
বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নার্গিস পারভিনের স্বামী ওবাইদুল হক বলেন, “গাজোলের বাবুপুরে বিরোধী বলে কেউ নেই। তাই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলকে কালিমালিপ্ত করতেই বিজেপির এই ষড়যন্ত্র। তৃণমূল দলেরই কয়েকজনকে ভুল বুঝিয়ে জেলা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করিয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু পরে ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন অভিযোগকারীরাই।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা ওবাইদুল হক বলেন, “বিগত সাড়ে চার বছরে অঞ্চল জুড়ে প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। এতেই বিরোধীরা পায়ের তলার মাটি হারিয়ে ফেলেছেন। তাই এরকম ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।”তৃণমূলের বাবুপুর অঞ্চল কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, “বাবুপুর পঞ্চায়েতে বিরোধী বলে কিছু নেই। তাই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপি ষড়যন্ত্র করছে। তবে এসব করে বিজেপির কোনও লাভ হবে না। কারণ মানুষ এখন বুঝতে পেরেছেন বিজেপি দলটা ধাপ্পাবাজের দল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করায় আখেরে তৃণমূলেরই লাভ হল। প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে সেই অভিযোগ।” যদিও বিজেপির তরফে জেলার কোনও নেতা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct