নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে প্রকাশ্যে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল।প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানকে মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মারধড়ের অভিযোগ প্রাক্তন তৃণমূল ব্লক সভাপতি এবং পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষের দলবলের বিরুদ্ধে।মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান তথা বর্তমান পঞ্চায়েত সদস্য মোহাম্মদ নজিবুর রহমানকে রাতের অন্ধকারে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে লোহার রড দিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠল হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি হজরত আলী এবং হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সমাউন ইসলামের দলবলের বিরুদ্ধে।রবিবার রাতে বাংরুয়া গ্রামে উরুষ মেলা থেকে ফিরছিলেন মোহাম্মদ নজিবুর রহমান।সেই সময় মাঝ রাস্তায় তাকে আটকে দেয় হজরত আলীর দুই ছেলে এবং সামাউন ইসলামের দলবল। মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে লোহার রড দিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বর্তমানে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। বিবাদের সূত্রপাত এক বছর আগে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে। তৃণমূলেরই অন্যান্য পঞ্চায়েত সদস্যদের আনা অনাস্থার জেরে প্রধান পদ খোয়াতে হয় মোহাম্মদ নজিবুর রহমানকে। অনাস্থা ভোটে তিনি হেরে যান পিন্টু যাদবের কাছে। সেই সময়েও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে শাসকদলের দুই পক্ষ। অভিযোগ, তারপর বিরোধী দল নেতা করার নাম করে তার কাছ থেকে কুড়ি হাজার টাকা নিয়েছিলেন তৎকালীন ব্লক সভাপতি হজরত আলী। কিন্তু তিনি কাজ করে দিতে পারেন নি। টাকা বারবার ফেরত চাইলে হুমকি দিয়েছেন। এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। কিন্তু হজরত আলীর পাল্টা অভিযোগ তিনি কোন টাকা নেননি। মোহাম্মদ নজিবুর রহমান প্রধান পদ হারিয়ে ভারসাম্যহীন হয়ে গেছেন। এর আগেও তিনি হজরত আলীকে শরীরিক ভাবে আক্রমণ করেছিলেন। সমগ্র ঘটনায় একদম প্রকাশ্যে এসে পড়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘাত। যদিও হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি তবারক হোসেন চৌধুরী জানিয়েছেন দলের মধ্যে কোন রকম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বা দুর্নীতি নেই। দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে দলের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে মিটিয়ে নেওয়া হবে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন আহত তৃণমূল নেতা মোহাম্মদ নজিবুর রহমান মোহাম্মদ নজিবুর রহমান বলেন, হজরত আলীর দুই ছেলে এবং কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সামাউন ইসলামের দলবল আমাকে মারধর করেছে। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়েছে। লোহার রড দিয়ে মেরেছে। আমার কাছে হজরত আলীর পদ দেওয়ার জন্য কুড়ি হাজার টাকা নিয়েছিল। সেটা আমি চাইছি বলেই ওদের রাগ। প্রাক্তন ব্লক সভাপতি হজরত আলী বলেন, দুর্নীতির জন্য ওর প্রধান পদ গেছে। সেই নিয়ে আমার উপর রাগ। আমি কোন টাকা নিই নি। সকলে জানে আমি দুর্নীতিতে থাকি না। ও মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গেছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি তবারক হোসেন চৌধুরী বলেন, দলের মধ্যে কোন দুর্নীতি বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। নজিবুর রহমান যেটা অভিযোগ করেছে সেটা খতিয়ে দেখে দলের মধ্যেই মিটিয়ে নেওয়া হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct