এহসানুল হক, বসিরহাট, আপনজন: তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত শাকচুরা এলাকা। দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সকাল থেকেই দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ তৃণমূলের। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের লাঠিচার্জ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বসিরহাট এক নম্বর ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার গভীর রাতে বসিরহাট ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির অনুগামীরা তৃণমূল ছাত্র নেতা আশরাফুল ইসলাম বুলবুলকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। অল্পের জন্য গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও অল্প বিস্তার আহত হয় ওই তৃণমূল ছাত্র নেতা আশরাফুল ইসলাম বুলবুল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বসিরহাট ১ নম্বর ব্লকের সাকচুড়া এলাকা। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বসিরহাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করে পুলিশ। তখন পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সভাপতির অনুগামীরা এমনটাই অভিযোগ পুলিশের। গুলিবিদ্ধ হয় বসিরহাট থানার এক কনস্টেবল। সোমবার গভীর রাতে আহত ওই কনস্টেবলকে প্রথমে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তারপর সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় বারাসাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে বসিরহাটের এক নম্বর ব্লক এর বিভিন্ন এলাকা। মঙ্গলবার সকাল হতে বসিরহাট ধামাখালি রোডের পিফা বাজারের কাছে রাস্তা অবরোধ করেন তৃণমূলের কর্মীরা। পাশাপাশি ঘোজাডাঙ্গা রোডের ড্যামডেমিয়া মোড়ে, টাকি রোডের দন্ডিরহাট রোড, টাকির থুবা মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূলের কর্মীরা ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী সমর্থকরা।
বিক্ষোভকারী তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের দাবি বসিরহাট ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নজরুল হককে সভাপতি পদ থেকে অপসারিত করে গ্রেফতার করতে হবে। এমনটাই দাবি তুলে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ হয়। এই ঘটনার পর বসিরহাট থানার পুলিশ এক তৃণমূল নেতার ছেলে সহ ৪১ জনকে গ্রেফতার করে বসিরহাট থানার পুলিশ। এই গ্রেফতারের পর ওই সমস্ত গ্রেফতার করা লোকজনদের ছেড়ে দিতে হবে এমনটাই দাবি তুলে বসিরহাট থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় বসিরহাট এক নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নজরুল হকের অনুগামীরা দাবি পুলিশের। সেই সময় বসিরহাট থানার পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের থানা সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বসিরহাট এক নম্বর ব্লকের বিভিন্ন এলাকা। বসিরহাট ১ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় চলছে পুলিশের টহলদারী। বিক্ষোভকারী তৃণমূল নেতা আলমগীর মন্ডল বলেন, ‘নজরুল হকের অনুগামীরা আমাদের বলিষ্ঠ এক যুব তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তাকে বাঁচাতে আসলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়, এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে ও নজরুল হককে অপসারিত করার দাবি তুলে আমরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছি, আমাদের এই দাবি মানা না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই তৃণমূল নেতা নজরুল হকের বলেন, ‘এর সঙ্গে তৃণমূল কোনোভাবেই জড়িত নয়, আইএসএফ এর কিছু দুষ্কৃতীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ধৃত ৪১ জনকে মঙ্গলবার দুপুরে তোলা হয় বসিরহাট মহকুমা আদালতে।এই ঘটনা নিয়ে বসিরহাট পুলিশ জেলার এসপি যোবি থমাসকে বলেন, ‘সাকচুড়া বাজারে একটা গন্ডগোল হয়েছিল গন্ডগোল থামাতে গিয়ে বসিরহাট থানার কনস্টেবল আহত হয়েছে,৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে,চারটে আগ্নেয়াস্ত্র ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে এলাকা থেকে। জেলা পরিষদের সদস্য পাঠানোর মন্ডল বলেন, যারা জোটসঙ্গে ছিল একুশে নির্বাচনে এবং আইএসএফের কর্মীরা তৃণমূল কংগ্রেসের উপরে হামলা করে এবং ছাত্রনেতা বুলবুল ইসলামকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়, তখন বসিরহাট থানার পুলিশের হাতে গুলি লাগে। এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের বসিরহাট থানার পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই তারা যথারীতি সমস্যা সমাধান করেছেন। তৃণমূলকে শেষ করার চক্রান্ত তাদের। কারণ বসিরহাট এক নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভালো ফল করেছিল পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচনে প্রায় ৪৭ হাজার ভোটে জিতিয়েছিল বিধায়ককে। কয়েকদিন আগে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছে এই ব্লক। বিরোধীরা সহ্য করতে না পেরে তৃণমূলের উপরে আক্রমণ করছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct