আপনজন ডেস্ক: গর্ভকালিন যে কোনো মহিলা সাধারণত বলে থাকেন, বুক জ্বালাপোড়া সমস্যার কথা। গর্ভকালীন অবস্থায় এ ধরনের সমস্যা হওয়াটা মোটেও অস্বাভাবিক নয়। এ সময় হরমোনের তারতম্যে জ্বালাপোড়ার সমস্যা, বমি হওয়া, বমি ভাব, অস্বস্তিকর অবস্থা, টক ঢেঁকুর, মুখে টক ভাব, এমনকি পেটের উপরিভাগে অথবা পুরো পেটে হালকা বা ভারী ব্যথা হতে পারে। এই সমস্যা হয়, মূলত ‘গ্যাস্ট্রিক জুস’ বা ‘পাচকরস’, যা খাদ্যনালির ভেতর দিয়ে উল্টো দিকে প্রবাহিত হয় বলে এ সমস্যা দেখা দেয়। এই সময়ে জরায়ুর বিস্তৃতির কারণে পাকস্থলিতে চাপ পড়ে। ফলে পাকস্থলিতে থাকা খাদ্য পেটের উপরিভাগে ঠেলে দেয় এবং অ্যাসিডিটি থেকে এমন হতে পারে। এ সময়ে ‘প্রোজেস্টেরন’ নামক হরমোন পাচনতন্ত্রেও পেশি প্রভাবিত করে খাদ্যনালির নিচে খাদ্য উদগীরণ প্রতিরোধক ভাল্ব শিথিল করে দেয়। ফলে খাদ্যনালিতে খাদ্য উঠে আসতে চায়। তবে এ সমস্যা মোটেও বিপজ্জনক নয়। গর্ভকালীন কিছু নিয়ম মেনে চললে গর্ভবতী আর বুক জ্বালাপোড়া সমস্যায় ভুগবেন না। এটা থেকে বাঁচতে নিয়মিত খাবার খাবেন। তবে একবারে ভরপেট খাবেন না। অল্প অল্প করে বারবার খাবেন। ঘুমের সময় ছাড়া তিন ঘণ্টার বেশি পেট খালি রাখবেন না। মসলাদার খাবার বাদ দিন। রান্নায় পেঁয়াজ-রসুন কম ব্যবহার করুন। হালকা খাবার খাবেন। চর্বি জাতীয়, ভাজাপোড়া, বাইরের খোলা খাবার ও বাসি-পচা খাবার এড়িয়ে চলুন। চিন্তামুক্ত থাকার অভ্যেস করুন। চা-কফি পান না করাই ভালো। তবে মাঝে মধ্যে গ্রিন-টি পান করতে পারেন। হালকা আদা চা পান করতে পারেন। আদায় ‘জিনজারলোস’ এবং ‘সাগোলস’ নামক উপাদান থাকে, যা পেটের সমস্যা দূর করতে পারে। চকোলেট কম খাবেন। লেবুর ‘সাইট্রাস’ নামক উপাদান বুক জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে। তাই লেবুর রস কম খাবেন। কমলা, মাল্টাতেও ‘সাইট্রাস’ নামক উপাদান থাকে। তবে কমলা বা মাল্টা খুব বেশি বুক জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে না। তাই কমলা বা মাল্টা অল্প অল্প খেতে পারেন। মাঝে মধ্যে টকদই খেতে পারেন। এতে হজমশক্তি বাড়ে। কোনোভাবেই কোল্ডড্রিংস বা কোমল পানীয় পান করবেন না। শোয়ার সময় পিঠের নিচে একটা নরম বালিশ রাখলে পাকস্থলিতে থাকা খাদ্য পেটের উপরিভাগে ঠেলে আসবে না। ফলে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা থেকে নিস্তার পাবেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct