আপনজন ডেস্ক: জর্জিয়ান গ্রাম দঘভানির ছোট্ট কাঠের স্থাপত্য। দেখলে মসজিদের চেয়ে বাড়ি বলেই প্রবল ধারণা হয়। তবে এটি মসজিদ। দক্ষিণ-পশ্চিম জর্জিয়ার অন্যান্য মসজিদের মতোই এটিও ঐতিহ্যবাহী কাঠের দোতলা বাড়ির আদলেই তৈরি। কিন্তু অভ্যন্তরীণ কারুকাজের বিবেচনায় এটাকে প্রাচীনকালের কোনো গুহার সঙ্গে তুলনা করা যায়। বাহ্যত যা সাধারণ গুহা, কিন্তু অভ্যন্তর ভাগ অপরূপ করুকাজ ও অলংকরণে সমৃদ্ধ। মূল প্রার্থনা কক্ষের ওপর ঝুলে আছে ফুল-পাতা শোভিত গম্বুজ। সোনালি বুননে অপরূপ তার বারান্দা। আর মিহরাব, যেখানে ইমাম অবস্থান করেন সেখানে নীল গাছে ফোটে হলুদ ফুল। তুরস্কের সীমান্তঘেষা কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী অ্যাডজারা অঞ্চলে এমন গুপ্তধনগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কিছু কিছু কাঠের মসজিদ এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে। আর কিছু ব্যবহারের অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অত্র অঞ্চলে এমন প্রায় ৫০টি মসজিদ পাওয়া যায়। দুঃখের বিষয় হলো, জর্জিয়ান সমাজ ও প্রশাসন ঐতিহাসিক মসজিদগুলোকে জাতীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে না। আগারার মসজিদগুলোর অভ্যন্তরভাগে আছে সমুদ্র সৈকতের ছাপ। যেমন নীল দেয়ালে পাম ও লেবু গাছের প্রতিলিপি থাকা। দুই শ বছরের প্রাচীন অনন্য এই স্থাপনাগুলো অন্যসব ইসলামী ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মতোই আক্ষরিক অর্থে জর্জিয়ান সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম। মুসলিমরা সংখ্যালঘু হওয়ায় জর্জিয়ায় ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মুসলিম ঐতিহ্য অবহেলিত। অ্যাডজারার একটি মুসলিম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সমন্বয়ক জাজা মিকেলাজ বলেন, আপনি মসজিদগুলোকে স্থানীয় পৌরসভার ওয়েবসাইট বা পর্যটন মানচিত্রে খুঁজে পাবেন না। জর্জিয়ার মুসলিম সংস্কৃতির অংশগুলো এখান থেকে বাদ পড়েছে। তারা মসজিদগুলোকে ভিন্নদেশি প্রভাব হিসেবেই দেখাতে চায়। অথচ অ্যাডজারার বেশির ভাগ কাঠের মসজিদ জর্জিয়ান নকশা ও শৈলীতে তৈরি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct