নেতার নেতৃত্ব মানিয়া চলা মনুষ্য জাতির স্বভাবজাত ধর্ম। কিছু লোক জাতির নেতা হইবেন। বাকি সাধারণ মানুষ তাহাদের পশ্চাদে ঘুরিবেন, ইহাই দুনিয়াব্যাপী প্রচলিত বিধি। কখনো কখনো নেতার উচ্চাকাঙ্ক্ষা সাধারণ মানুষকে অবোধ বালকের ন্যায় বশীভূত করিয়া দেশ হইতে দেশান্তরে ছুটাইয়া ফিরিয়াছেন, মানুষের দ্বারা মানুষের রক্তে হাত রাঙাইয়াছেন, মানুষ হত্যা করিয়া রক্তের ফোয়ারা দেখিয়া তৃপ্তি লাভ করিয়াছেন। সাধারণ মানুষ সাধারণ মানুষকে সংহারক বনিয়াছেন। যুদ্ধ লইয়া লিখিয়াছেন ইসহাক মাদানি। আজ দ্বিতীয় কিস্তি।
ইউক্রেন-এর রাষ্ট্রপতি একজন ইয়াহুদি। ইয়াহুদিরা জ্যাকব নবীর (ইয়াকুব নবীর) উত্তরসূরি বংশধর যাঁহাদের বসবাস ছিল ফিলিস্তিনের আশেপাশে। জ্যাকব নবীর সন্তানগণ তাঁহাদেরই এক সৎভাই ইউসুফকে পরিকল্পনা মাফিক কুঁয়ায় ফেলিয়া আসিয়া নিজেদেরকে সৎ প্রমানার্থে পিতার নিকট মুসলধরে বৃষ্টি বৎ ফুঁপিয়া ফুঁপিয়া কান্নাকাটি করিয়াছিল। তাঁহারা কনভার্টেড হইয়া অন্য ধর্ম গ্রহণ করিলেও, কিন্তু অন্যের কনভার্টেড হইয়া ইয়াহুদি হওয়ার কোনো সুযোগ নাই। যাহা হউক মধ্যপ্রাচ্যে ইয়াহুদি নেতৃত্বাধীন সমরাস্ত্রে বলিয়ান ইসরাইল রাষ্ট্র কায়েম করিয়া মধ্যপ্রাচ্যের তেল ভান্ডারের উপর আমেরিকা ন্যাটো কর্তৃত্ব করিতেছে। হয়ত অনুরূপ একটি করিডোর তৈয়ারির স্বার্থে রাশিয়ারই এক সময়ের অংগ রাজ্য ইউক্রেনকে বাছিয়া লইয়া ন্যাটো তাহার অনুগত রাষ্ট্র বানাইবার সংকল্প করিয়াছিল, রাশিয়া ইহা বিলক্ষণ বুঝিতে পারিয়া পরিণতিতে যাহা হওয়ার তাহাই হইতেছে।
এ কথা অস্বীকার করিবার নয় যে ইয়াহুদিরা জনবলে ক্ষুদ্র হইলেও কুটনৈতিক বুদ্ধি বলে যথেস্ট বলিয়ান।তাই মধ্যপ্রাচ্যের ইসরাইল রাষ্ট্রের ধাঁচের একটি অনুগত পরাশক্তিধর ইউক্রেন রাষ্ট্র কায়েম করিতে সক্ষম হইলে তেল, গ্যাস, ও শস্য ভান্ডার যেমন খুশি তেমন সহজ লভ্য হইবে। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস, যে রাশিয়াকে সংগে লইয়া আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল রাষ্ট্র কায়েম করিয়াছিল, একই উদ্দেশ্যে আজ রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে সাহায্য করিয়া ইয়াহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করিতে চাহিতেছে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল রাষ্ট্র যখন কায়েম করা হয় তখন স্পন্দনহীন (মুসলিম) জাতির ভূভাগে কায়েম হইয়াছিল বলিয়া কোনো প্রকার হরকত নজরে আসে নাই। কিন্তু রাশিয়া স্পন্দনহীন না হওয়ায় পাথরে পাথরে ঘর্ষণে অগ্নি স্ফুলিঙ্গ বাহির হইতেছে। অপেক্ষা করিতেই হইবে দেখিবার জন্য,কোন প্রান্তে বরফ জমে। সংবাদে যাহা প্রকাশিত হইতেছে তাহাতে মনে করা যেতেই পারে “চিতা”, “কুমির” শিকার করিতে গিয়া ফাঁদে পড়িয়াছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের ও বৃহত্তর এশিয়ার অধিবাসী এই সকল নির্যাতন হইতে বাঁচিতে চাহিছে বলিয়া সকলের বিশ্বাস।শুধু চাহিলেই হইবেনা common interestএ রাষ্ট্র প্রধানদের এক জোট হইতে হইবে ।ইউরোপ যদি নিজেদের মধ্যে মতভেদ সত্ত্বও এক জেট হইতে পারে তবে এশিয়া কেন পারিবে না ? রাশিয়ার বৃহত্তর এলাকা এশিয়া মহাদেশের অংশ হওয়ায় এশিয়ার দেশগুলি এক অপরের প্রতি সহনশীল হইলে এশিয়া key of the world এর মর্যাদায় উন্নিত হইতে পারিবে বলিয়া বিশ্বাস অনেকের মত আমারও। এ সুবর্ণ সুযোগ হাত ছাড়া হইলে আবার কখনো আসিবে কি আসিবে না তাহা ভবিষ্যত।বুকভরা আশায় থাকিলাম এশিয়ার স্বর্ণযুগের সূর্য কিরণ দেখিবার জন্য। স্রষ্টার দৃষ্টিতে মানব সংহার সব চাইতে বড় অপরাধ।মানবতার খাতিরেই ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ হওয়া উচিত। যুদ্ধে মানব সংহারের খতিয়ান ।উদাহরণ স্বরূপ এখানে কয়েকটি উল্লেখ করা হইল—
চেঙ্গিজ খান এর যুদ্ধাভিযানে যে সংখ্যায় প্রাণহানি ঘটিয়াছিল-(1206-1227 AD) “Genghis Khan’s conquests cause the deaths of roughly 40 million people,especially impacting china and the area that is now Iran. There is no artwork of Genghis khan from his life time.(www.britannica.com). “He was responsible for the death of 40 million people. 10% of the world population at the time.(wikipedia).
লেখক বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ও প্রাবন্ধিক।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct