আপনজন ডেস্ক: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরন মুক্তি পাওয়ার পর অনেক চমকপ্রদ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, তাকে সাতবার ফাঁসিতে ঝোলানোর পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। একইসঙ্গে ভেলোর জেলে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের কথাও উল্লেখ করেন শ্রীহরন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর প্রশংসা করতেও দ্বিধাবোধ করলেন না। তিনি বলেন, প্রিয়াঙ্কা খুবই দয়ালু। তিনি একজন দেবদূতের মতো। শ্রীহরণ বলেন, কারাগারে আমাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করা হয়নি। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা গান্ধী পূর্ণ সম্মান দিয়েছেন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী শ্রীহরণের সঙ্গে দেখা করে কাঁদতে শুরু করেন। তিনি বলেন, কারাগারে অফিসারদের সামনে আমাদের বসতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আমার সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি আমাকে তার পাশে বসিয়ে দেন। এটা আমার জন্য একটি ভিন্ন অভিজ্ঞতা ছিল। তিনি আরও বলেন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আমাকে তার বাবার হত্যার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তিনি খুব আবেগপ্রবণ ছিলেন। এই সময় তিনিও কাঁদতে থাকেন। শ্রীহরন বলেন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে তা প্রকাশ্যে বলা যাবে না। এগুলো তার ব্যক্তিগত মতামত হতে পারে। নলিনী বলেন, গান্ধী পরিবারের জন্য তিনি খুব দুঃখিত। গান্ধী পরিবারের সঙ্গে দেখা করার প্রশ্নে তিনি বলেন, ওনারা দয়া করে। যদিও রাজীব হত্যাকাণ্ডে তার কোও ভূমিকা নেই বলে দাবি করেন নলিনী। হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা স্বামীর বন্ধু বলে জানান তিনি। নলিনী দাবি করেছেন, তিনি তাদের চিনতে পারায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে তার ভূমিকা নিয়ে কোনও অনুশোচনা আছে কিনা জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে নলিনী বলেন, ‘আসলে আমার কোনও ভূমিকা ছিল না। তবে যা ঘটেছে তার জন্য তারা অনুতপ্ত। শ্রীহরণ বলেন, ওরা আমার স্বামীর বন্ধু ছিল। এই কারণেই আমি তার সাথে পরিচিত হয়েছি। আমি কখনো তার সাথে কথা বলতাম না।
তাদের যেকোন প্রয়োজনে সাহায্য করতাম। আমি তাকে নিয়ে মন্দিরে, বাজারে বা থিয়েটারে যেতাম। যদিও তার পরিবার সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। তিনি বলেন, ২০০১ সালে তার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হয়েছিল। এর আগে তাকে সাত দফা ফাঁসি দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। নলিনী বলেন, জেলের মধ্যে তার মেয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯৯২। তারপর দুই বছরের মধ্যে তার মায়ের থেকে আলাদা হয়ে যান। তার মেয়ে এখন লন্ডনে ডাক্তার। মেয়ের বিয়ে হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেই সময় শ্রীহরন এক মাসের জন্য প্যারোল পেয়েছিলেন এবং তিনি বিয়ের অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, মেয়েটি আমাকে পুরোপুরি ভুলে গেছিল। আমি তাকে জন্ম দিয়েছিলাম কিন্তু দুই বছরের মধ্যে তার থেকে আলাদা হতে হয়। এখন আমরা আবারও আমাদের স্মৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছি। শ্রীহরন ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন।জনসভা চলাকালে আত্মঘাতী হামলায় তিনি নিহত হন।একই মামলায় শ্রীহরনকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।যদিও পরে সুপ্রিম কোর্ট সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct