সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: চলতি বছরের আগস্ট মাস থেকে প্রায় ৩০০ কর্মীর বেতন বন্ধ। তাঁরা প্রত্যেকেই হুগলি নদীর জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতিতে কর্মরত। টানা চার মাস বেতন না মেলাই রীতিমত উদ্বেগে রয়েছেন কর্মচারীরা। পাশাপাশি নিদারুণ অর্থসঙ্কটের মুখেও পড়েছেন তাঁরা। হুগলি নদীর জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির পরিচালনায় মোট ৪টি জেলাতে ফেরি পরিষেবা দেওয়া হয়। ওই চার জেলার মধ্যে পরে হাওড়া, কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সেখানে প্রায় ১৮ থেকে ২০টি ফেরি রুট রয়েছে। নিত্যদিনের কাজের সুবাদে ওই ফেরি ঘাটগুলি দিয়ে হাজার হাজার যাত্রী পারাপার করেন। যাত্রী পরিষেবাতে প্রচুর কর্মীও তাই সেখানে কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে স্থায়ী এবং অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কর্মীর বেতন ৪ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। যদিও এই বেতন বন্ধের দুর্ভোগ নতুন নয়। কারণ আগেও তাঁদের বেতন নিয়ে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে সরকারি হস্তক্ষেপে দ্রুত জটিলটা কেটেও গিয়েছে। এবার টানা আগস্ট মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বেতন না মেলায় কর্মীদের কপালে রীতিমত চিন্তার ভাঁজ পড়ে গিয়েছে।চার জেলার ফেরি ঘাটে কর্মরত স্থায়ী এবং অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন বাবদ প্রতিমাসে খরচ হয় প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা। টানা চার মাস বেতন বন্ধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সমিতির স্পেশ্যাল অফিসার অসিত বিশ্বাস। বেতন প্রসঙ্গে অসিতবাবু জানিয়েছেন, টাকা না পাবার মূল কারণ লঞ্চে এখন যাত্রীসংখ্যা আগের থেকে অনেক কমে গিয়েছে। বেতন, পিএফ, জ্বালানি এবং আনুসঙ্গিক খরচ বাবদ মাসে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়ে যায়। সেখানে সারা মাসে টিকিট বিক্রি করে মাত্র এক কোটি মতো আয় হয়। সেক্ষেত্রে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ লক্ষের একটা অভাব তৈরি হচ্ছে। তাছাড়া, এবার পুজোর সময় বোনাস এর সঙ্গে এক মাসের বেতনও দেওয়া হয়েছে। ফলে ভাঁড়ারে টান পড়েছে। কিন্তু এই সমস্যা কর্মীদের বেশিদিন বয়ে বেড়াতে হবে না। যত দ্রুত সম্ভব কর্মীদের বেতন দেওয়া হবে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে এসেছে। তিনি বিষয়টি রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভাষিশ চক্রবর্তীকে দেখতেও বলেছেন। অনুমান করা হচ্ছে চলতি মাসেই বেতন পাবেন হুগলি নদীর জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতিতে কর্মরত ৩০০ কর্মচারী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct