আপনজন ডেস্ক: দেশজুড়ে যখন পিটিয়ে হত্যার বাড়ন্ত। বিশেষ করে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষদের কখনও গোমাংস রাখার সন্দেহে কখনও গোহত্যার সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছিল তখন অন্যান্য কয়েকটি অ-বিজেপি সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও িপটিয়ে হত্যা রোধে বিল পাশ করে। ২০১৯ সালের আগস্টে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাস হয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল (প্রিভেনশন অফ লিঞ্চিং) বিল, ২০১৯। এই বিলে পিটিয়ে হত্যায় জড়িতদের জন্য তিন বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। যাইহোক, আজ পর্যন্ত, আইনটি বাস্তবায়নের অধরা। এতে এমন কিছু বিধি অনুসরণ করা হয়েছে যা কেন্দ্রীয় আইনগুলির সাথে বিরোধ বাধতে পারে। যদিও পশ্চিমবঙ্গ গত কয়েক বছর ধরে লিঞ্চিংয়ের বড় বড় ঘটনাগুলির মধ্যে পড়েনি। তবে জনসাধারণের দ্বারা আগ্রাসনের এই ধরনের অভিব্যক্তি, মৃত্যু বা গুরুতর আঘাতের কারণে রাজ্যের বিভিন্ন কোণ থেকে রিপোর্ট আসতে থাকে। ান্য রাজ্যে যেমন বেছে বেছে ষংখ্যালগু সম্প্রদায়ের মানুষদের সাম্প্রদায়িকতার শিকার হওয়ার কারণে হত্যার শিকার হতে হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ঠিক তেমনটি নয়। এখানে বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে থাকে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, জরতি বছরের অগাস্টে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার শ্যামনগরে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে এক যুবককে স্থানীয়রা ধরে ফেলে এবং ব্যাপক মারধর করে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। চলতি বছরের জুলাই মাসে বীরভূম জেলায় স্ত্রীকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া এক ব্যক্তিকে আটক করে হত্যা করা হয়। গত জুন মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বারুইপুরে স্থানীয় লোকজনের হাতে নিহত এক সন্দেহভাজন চোরের একই পরিণতি হয়েছিল। এমনকি গত ৪ সেপ্টেম্বর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুরে এক সন্দেহভাজন চোরকে ব্যাপক মারধর করা হয় এবং পুলিশ তাকে উদ্ধার করার আগেই তাকে গুরুতর জখম করা হয়। এখন মব লিঞ্চিং-এর ঘটনার সমাজে কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলা কি জনগণকে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে এবং সজাগ ন্যায়বিচারের আশ্রয় নিতে উৎসাহিত করছে? এই ক্ষেত্রে নতুন আইনগুলি কি পিটিয়ে হত্যার প্রবণতা হ্রাস করবে, তাই নিয়ে নানা আলোচনা অব্যাহত। তবে, এ রাজ্যে ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রিভেনশন অফ লিঞ্চিং বিল রাজ্য বিধানসভায় চার বছর আগে পাশ হলেও তা আইনে পরিণত হয়নি। অথচ, যে কটি রাজ্য মব লিঞ্চিং নিয়ে সরব হয়েছিল তাদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ অন্যতম। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারে বারে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়িত হওয়ার কোনও উচ্চবাচ্য দেখা যাচ্ছে না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct